শিরোনাম
ভারতে এই প্রথম কোনো রাজ্য পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ পেয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গ অর্থাৎ রূপান্তরকামী ব্যক্তিরা। বিশেষ একটি লক্ষ্য সামনে রেখে তাদেরকে পুলিশে নিয়োগ দিয়েছে দেশটির ছত্তীশগঢ় রাজ্য সরকার। আর তা হচ্ছে মাওবাদী যোদ্ধাদের মোকাবিলা করা।
চলতি মাসের মাঝামাঝিতে তৃতীয় লিঙ্গের ৯ ব্যক্তিকে পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ছত্তীশগঢ় রাজ্যের বস্তার বিভাগের সাতটি মাও অধ্যুষিত জেলায় মাওবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য ‘বস্তার ফাইটার ফোর্স’ নামে একটি নতুন বাহিনী গঠন করা হয়েছে। এই বাহিনীতে স্থানীয় যুবদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
বস্তার পুলিশ বিভাগের সাতটি জেলা থেকে মোট ২ হাজার ১০০ জনকে এই বাহিনীতে নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের মধ্যেই আছেন তৃতীয় লিঙ্গের ৯ জনও। এবার, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামবেন তারাও। পাহাড়, বন এবং নদী-নালায় ঘুরে ঘুরে সন্ধান করতে হবে মাও ঘাঁটির।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ‘বস্তার ফাইটার ফোর্স’ নামে নতুন এই বাহিনীতে নিয়োগ পেতে নির্বাচিত প্রার্থীদের কঠিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। মাওবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা প্রয়োজন। আর সেটির ভিত্তিতেই এই বাহিনীর সদস্যদের বেছে নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এই বাহিনীতে জায়গা পেতে মোট ৫৩ হাজার ৩৩৬ আগ্রহী প্রার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের, ৩৭ হাজার ৪৯৮ জন পুরুষ এবং ১৫ হাজার ৮২২ জন নারী প্রার্থী। তবে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র ২ হাজার ১০০ জন।
এতেই স্পষ্ট যে, এই বাহিনীকে জায়গা করে নেওয়া কতটা চ্যালেঞ্জের ছিল। স্ত্রীলিঙ্গ এবং পুংলিঙ্গের জন্য যোগ্যতার মাপকাঠিতে কোনো ভেদাভেদ করা হয়নি। আর তাই তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও একই মাপকাঠি ছিল।
‘বস্তার ফাইটার ফোর্সে’ যে ৯ জন ট্রান্সজেন্ডার মানুষ জায়গা করে নিয়েছেন তারা হলেন – দিব্যা, দামিনী, সন্ধ্যা, সানু, রানি হিমাংশি, রিয়া, সীমা এবং বরখা। তাদের মধ্যে ৮ জন কাঙ্কের জেলার বাসিন্দা এবং অপরজন বস্তার জেলার।
এদিকে তৃতীয় লিঙ্গের এই ৯ জন ছত্তীশগঢ় পুলিশে চাকরি পাওয়ায়, সামগ্রিকভাবে রাজ্যের রূপান্তরকামী সমাজে আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে। এই ৯ জনের একজন বরখা বলেছেন, ‘আমাদের সম্প্রদায়কে সমাজের মূল স্রোতে যুক্ত করার জন্য প্রচেষ্টা দরকার। আমরা সবাই স্বাভাবিক জীবন চাই। জীবিকার প্রশ্নটাই আমাদের সামনে সবচেয়ে বড়।’