শিরোনাম
বিলকিস বলেছেন, তার ধর্ষক ও তার পরিবারের ৭ জন সদস্যকে খুনের দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত ১১ জনের মুক্তি তার শান্তি কেড়ে নিয়েছে। ন্যায়বিচারের প্রতি তার ভাবনাকে ধাক্কা দিয়েছে।
সম্প্রতি গুজরাট সরকার এই ১১জনকে মুক্তি দিয়েছে। তারপর বিলকিস তার মনের কথা জানিয়েছেন। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। তিনি তখন পাঁচ মাসের গর্ভবতী।
তার ছোট্ট মেয়ে সহ পরিবারের একাধিক সদস্যকে হত্যা করা হয়। সেই ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেয়ার পর বিলকিসের মনে হচ্ছে, তিনি আবার অরক্ষিত। তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে।
তার প্রশ্ন, ‘কোনো নারীর প্রতি ন্যায়বিচার এভাবে কী করে শেষ হতে পারে? দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি আমার আস্থা আছে। আমি এই ব্যবস্থাকে বিশ্বাস করেছিলাম। আমি সেই ভয়ংকর অবস্থা কাটিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছিলাম। আমার এই বেদনা শুধুমাত্র নিজের জন্য নয়, যে নারীরা আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে, তাদের জন্যও’।
বিলকিস একটি ছোট বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘কেউ আমার নিরাপত্তার কথা ভাবেনি। এই অন্যায় ও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমার কল্যাণের কথা চিন্তা করা হয়নি’।
গুজরাট সরকারের কাছে তার একটা অনুরোধও আছে, তা হলো, ‘আমাকে নির্ভয়ে ও শান্তিতে বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে দাও। আমি ও আমার পরিবার যাতে সুরক্ষিত থাকে, সেটা নিশ্চিত করা হোক’।
বিলকিসের আইনজীবী শোভা গুপ্তা এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘তার ধর্ষকরা মুক্তি পেয়ে গেল, সেটা এই নারীর কাছে বড় উদ্বেগের বিষয়। যতদিন এই শাস্তিপ্রাপ্তরা ধরা পড়েনি, ততদিন বিলকিস পালিয়ে পালিয়ে বেঁচেছিলেন। এখন তিনি কী করবেন তা ভাবতে পারছেন না’।
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে ভারত যখন উৎসব পালন করছে, তখন ওই ১১ শাস্তিপ্রাপ্তকে মুক্তি দেয়া হয়। তাদেরকে মালা পরিয়ে স্বাগত জানায় হিন্দুত্বাবাদী সঙ্ঘ পরিবারের একটি শাখা সংগঠন। বিরোধীরা এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেছে। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তিনি নারীশক্তির কথা বলার পর এই ১১জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বিরোধী নেতারা বলেছেন, এটাই বিজেপি-র নতুন ভারত।