বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির প্রতিবাদে সরব মিমি ও নুসরাত

ফানাম নিউজ
  ১৯ আগস্ট ২০২২, ১৬:১৭

ভারতের কুখ্যাত গুজরাট দাঙ্গার সময় বিলকিস বানো নামের এক নারীকে ধর্ষণ ও তার পরিবারের ৭ সদস্যকে হত্যাকারী ১১ জনকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে আদালত। গুজরাট আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়েছে ৬ হাজারেরও বেশি আবেদন। তাদের দাবি, ওই ধর্ষকদের সময়ের আগে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক।

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সংসদ সদস্য নুসরাত জাহান এবং মিমি চক্রবর্তীও এই রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন টুইটারে। ওই গণধর্ষণকারীদের মুক্তির নিন্দার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোঁচাও দিয়েছেন তাৎরা।

মিমি লিখেছেন, ‘১১ জন মানুষ যারা গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত তাদের কেন মুক্তি দেওয়া হল? তাহলে ১৫ আগস্টের ভাষণের সারবত্তাই বা কী? আপনি তো নারীদের সম্মান দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কেবল একজন নারী হিসেবেই এই কথা বলছি। আমি ক্রুদ্ধ ও ভগ্নহৃদয়’। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের ‘হর ঘর তেরঙ্গা’ কর্মসূচিকেও কটাক্ষ করে মিমি লেখেন, ‘সব বাড়িতে তেরঙ্গা তো ওড়ানো হল, কিন্তু স্বাধীনতা কি পাওয়া গেল? ৭৫ বছর পরেও? নিজেকেই প্রশ্ন করুন’।

নুসরাত জাহানও তার পোস্টে একই ভাবে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাকে লিখতে দেখা গিয়েছে, ‘কবে এমন অন্যায় শেষ হবে তার অপেক্ষায়। আমি অপেক্ষায়। তিনিও অপেক্ষায়। বিলকিস বানো। ন্যায়বিচার সততার প্রতিনিধিত্ব করে। এবং সত্যি, সত্যিটা হল ১১ জন গণধর্ষণ ও খুনের অপরাধীর মুক্তির পরে মিষ্টি বিলোনো হচ্ছে’।

ওদিকে, ধর্ষকদের মুক্তির নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে ভারতের শীর্ষ আদালতে জমা পড়েছে ৬ হাজারেরও বেশি আবেদন। মধ্যবিত্ত নাগরিক থেকে প্রান্তিক শ্রেণির প্রতিনিধি, মানবাধিকার কর্মী, লেখক, ইতিহাসবিদ, গবেষক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সাংবাদিক, প্রাক্তন আমলা অনেকেই আবেদন জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, যে দিনটা আমরা আমাদের স্বাধীনতা উদযাপন করছিলাম, সেদিনই দেশের নারীরা দেখতে পেলেন কীভাবে রাষ্ট্রের উদারতায় গণধর্ষণকারী ও গণহত্যাকারীরা মুক্তি পাচ্ছে!

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে ভারত যখন উৎসব পালন করছে, তখন ওই ১১ শাস্তিপ্রাপ্তকে মুক্তি দেয়া হয়। তাদেরকে মালা পরিয়ে স্বাগত জানায় হিন্দুত্বাবাদী সঙ্ঘ পরিবারের একটি শাখা সংগঠন। বিরোধীরা এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেছে। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তিনি নারীশক্তির কথা বলার পর এই ১১জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বিরোধী নেতারা বলেছেন, এটাই বিজেপি-র নতুন ভারত।