শিরোনাম
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। এতে গত ফেব্রুয়ারি থেকেই শঙ্কিত তাইওয়ান। তাদের আশঙ্কা- যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে চীন। সম্ভাব্য হামলা থেকে জাদুঘর রক্ষার প্রস্তুতিও শুরু করেছে দেশটি।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ-এর স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরকে ঘিরে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। এর জবাবে তাইওয়ানকে ঘিরে ভয়াবহ সামরিক মহড়া চালায় চীন।
এর পর গতমাসে ‘ওয়ারটাইম রেসপন্স এক্সারসাই’ সেরে নিয়েছে তাইওয়ানের ন্যাশনাল প্যালেস মিউজিয়াম। হঠাৎ যুদ্ধ বেঁধে গেলে কীভাবে সব গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকর্ম রক্ষা করতে হবে, প্রয়োজনে সব কিছু নিরাপদ স্থানে সরাতেও হবে তা শেখানো হয়েছে কর্মীদের।
তবুও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না সরকার। চীন হামলা চলাতে পারে- এ আশঙ্কা কাটছেই না। তাই জাতীয় সংসদ সব জাদুঘরকে যুদ্ধকালীন প্রটোকল চূড়ান্ত করার তাগিদ দিচ্ছে। এই তাগাদা শুরু হয়েছে ইউক্রেন রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই।
ন্যাশনাল প্যালেস মিউজিয়ামের পরিচালক মি-চা উ জানান, ‘ওয়ারটাইম রেসপন্স এক্সারসাইজ’-এর পর জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে যুদ্ধ শুরু হলে জাদুঘরের সব নিদর্শন কোথায় কোথায় সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে তা ঠিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর বাইরেও চলছে জাদুঘর রক্ষার আরও কিছু আগাম প্রস্তুতি।
গত ৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে তাইওয়ানের জাতীয় সংসদের স্পিকার ইউ সি কুন জানান, সরকারের নির্বাহী শাখা জাদুঘরের সব নিদর্শন রক্ষা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে সেসব দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছেন তারা।
রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে গত ফেব্রুয়ারিতে। সেই থেকে তাইওয়ান চীনের হামলার আশঙ্কায় পড়লেও শঙ্কাটা অনেক বেড়েছে চলতি মাসে ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর করার পর।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ-এর স্পিকার পেলোসির সফরের পরই তাইওয়ানের চার পাশে ব্যাপক পরিসরে সামরিক মহড়া করে চীন। সাতদিনের সেই মহড়ার সময় চীনে খবর ছড়িয়ে পড়ে, নিজেদের যাবতীয় সংগ্রহ জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নিচ্ছে তাইওয়ান ন্যাশনাল প্যালেস মিউজিয়াম। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ অবশ্য পরে বিবৃতি দিয়ে বলেছে খবরটা গুজব ছাড়া কিছুই নয়।
জাদুঘরের সব সামগ্রী জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেওয়ার খবর গুজব হলেও তাইওয়ান যে চীনের হামলার আশঙ্কায় জাদুঘরের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে, তা সত্যি। ‘ওয়ারটাইম রেসপন্স এক্সারসাইজ’ তারই একটা অংশ।
সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মোট সাত লাখ গুরুত্বপূর্ণ আইটেম থেকে ৯০ হাজারটি নিয়ে ‘ওয়ারটাইম রেসপন্স এক্সারসাইজ’ করা হয়।
সত্যি সত্যি যুদ্ধ হলে এতগুলো অমূল্য নিদর্শন কোথায় সরিয়ে নেবে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ? ন্যাশনাল তাইপে ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশন-এর মিউজিয়াম স্টাডিজ-এর বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিসিয়া হুয়াং বলেন, এত সম্পদ কিভাবে, কোথায় সরিয়ে নেওয়া সম্ভব তা আমি জানি না- সত্যিই জানি না।
তিনি বলেন, তাইওয়ানের অধিকাংশ জাদুঘরে স্বাভাবিক জরুরি পরিস্থিতি, অর্থাৎ আগুন, বন্যা বা সন্ত্রাসী হামলার সময় সব নিদর্শন রক্ষা করার ব্যবস্থা রয়েছে, তবে সেই ব্যবস্থা যুদ্ধের কথা ভেবে দাঁড় করানো হয়নি।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে