শিরোনাম
ভারতের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে পৌঁছেছে চীনের একটি বিতর্কিত গবেষণা জাহাজ।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকালে স্যাটেলাইট ও আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ট্র্যাক করার সুবিধা সম্পন্ন চীনা জাহাজটি হাম্বানটোটা বন্দরে পৌঁছায়। এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
এর আগে, ভারতের চাপের মুখে চীনের এই সামরিক জাহাজের পরিকল্পিত সফর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলম্বিত করতে বলেছিল শ্রীলঙ্কা। চীনা জাহাজের বিতর্কিত সফরটি আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোবে না বলে আশ্বস্ত করেছিলেন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে নিজেই। তবে এ ঘোষণার পর সপ্তাহ পার না হতেই সুর বদলে ওই জাহাজটিকে শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের অনুমতি দেয় কলম্বো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন এক সময় চীনের সামরিক এ জাহাজটি শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হলো, যখন সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখে রয়েছে দেশটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইউয়ান ওয়াং ৫-কে গবেষণা এবং জরিপ জাহাজ বলা হলেও এটি মূলত একটি গুপ্তচর জাহাজ। এটি মহাকাশ এবং স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের জন্যও নিযুক্ত। এছাড়া আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে নির্দিষ্ট ব্যবহার রয়েছে এই জাহাজের।
চীনের নির্মিত হাম্বানটোটা বন্দরটি সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বেইজিং। আর ভারতের উদ্বেগ মূলত সেখানেই। দেড় বিলিয়ন ডলারে নির্মিত এ বন্দরটি এশিয়া থেকে ইউরোপের প্রধান শিপিং রুটের কাছাকাছি অবস্থিত।
শ্রীলঙ্কা হচ্ছে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। ভারতীয় মহাসাগরে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য বিস্তার এবং শ্রীলঙ্কার ওপর চীনের প্রভাব জোরদার করার বিষয়টি নিয়ে নয়াদিল্লি বেশ উদ্বিগ্ন। নিজেদের প্রভাব বলয়ের মধ্যে চীনকে অন্যতম প্রতিপক্ষ মনে করে থাকে ভারত।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের দ্য ইউয়ান ওয়াং ৫ মহাকাশ ও কৃত্রিম উপগ্রহ নজরদারি করার কাজে নিয়োজিত। বিশেষ করে আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কাজে জাহাজটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ভারত সরকার চীনের জাহাজটির শ্রীলঙ্কার বন্দরে প্রবেশ করার বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জাহাজটি দিয়ে নয়াদিল্লির সামরিক অবকাঠামোগুলোয় নজরদারি চালানো হতে পারে। শুধু উদ্বেগ নয়, ভারত সরকার এ নিয়ে কলম্বোর কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দিল্লির নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থের ওপর এ ধরনের যেকোনো নজরদারির বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে তারা এবং নিজেদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।