সালমান রুশদির ওপর হামলাকারী কে এই হাদি মাতার?

ফানাম নিউজ
  ১৩ আগস্ট ২০২২, ১১:৫০

ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক সালমান রুশদির ওপর নিউইয়র্কে হামলা হয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত রুশদির সার্জারি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি ভেন্টিলেশনে আছেন। এখনও কথা বলতে পারছেন না। তার বইয়ের এজেন্ট এন্ড্রু ওয়াইলি জানিয়েছেন, সম্ভবত এক চোখ হারিয়েছেন তিনি। হামলাকারীকে আটক করেছে পুলিশ।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের হাতে আটক হামলাকারী হাদি মাতার নিউ জার্সির একজন বাসিন্দা। তার বয়স ২৪ বছর।

হামলাকারীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। রুশদির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে। 

পুলিশ এই বর্বর হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি। হামলাকারী হাদি মাতারের আগের রেকর্ড জানতে এবং হামলার উদ্দেশ্য বের করতে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সহায়তা চেয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।

এনবিসি নিউইয়র্কের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একজন সদস্য জানিয়েছেন, হামলাকারী ইরানি শাসকগোষ্ঠীর সমর্থক ও শিয়া অনুসারী।

যদিও হাদি মাতারের সঙ্গে ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) বাহিনীর কোনো সংযোগ পাওয়া যায়নি। তার নামে ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল।

এর আগে শুক্রবার সকালে পশ্চিম নিউইয়র্কের শাটোকোয়া ইনস্টিটিউশনের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সালমান রুশদির ওপর হামলা চালান হাদি মাতার।

প্রত্যক্ষদর্শীরা সে সময় জানিয়েছিলেন, তাকে ২০ সেকেন্ডে ১০ থেকে ১৫ বার আঘাত করা হয়েছে। তবে সে সময় তারা ঠিক বুঝতে পারেননি যে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, নাকি তাকে ঘুষি মারা হয়েছে।

এপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, হামলাকারী রুশদিকে ১০ থেকে ১৫ বার ঘুষি বা ছুরিকাঘাত করেছে।

হামলার পর রুশদি তৎক্ষণাৎ মেঝেতে পড়ে যান। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে লেখককে ঘিরে ফেলেন। অনুষ্ঠানে আনুমানিক আড়াই হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘রুশদিকে মুহূর্তের মধ্যে বেশ কয়েকবার আঘাত করা হয় এবং তিনি তার রক্তের ওপরই লুটিয়ে পড়েন।’

হামলায় সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী হেনরি রিসও মাথায় সামান্য আঘাত পেয়েছেন। রিস একটি অলাভজনক সংস্থার সহপ্রতিষ্ঠাতা, যা নিপীড়নের হুমকির মধ্যে থাকা নির্বাসিত লেখকদের জন্য সুরক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করে।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি ১৯৮১ সালে ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ উপন্যাস দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। শুধু যুক্তরাজ্যেই বইটির ১০ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল। 

১৯৮৮ সালে দ্য স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাস লেখার পর থেকে বছরের পর বছর প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে আসছেন এই লেখক।

দ্য স্যাটানিক ভার্সেস তার রুশদির চতুর্থ উপন্যাস। এই বই লেখার জন্য রুশদিকে ৯ বছর আত্মগোপনে থাকতে হয়েছিল।