শিরোনাম
শনিবার রাতে ইউক্রেন তথা ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। গোলা এসে পড়ে পরমাণু কেন্দ্রটির ঠিক বাইরে কিছু ব্যবহৃত কন্টেইনারের উপর। ঘটনায় এক কর্মী আহত হন বলে ইউক্রেনের জাতীয় পরমাণু বিদ্যুৎ কোম্পানি জানিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই ঘটনার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছেন। অন্যদিকে রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভিযোগ, ইউক্রেনের সেনারাই এই কাজ করেছে। বস্তুত, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করেছিল। তবে ভেতরে এখনো ইউক্রেনের কর্মীরাই আছেন। তারাই প্রকল্পে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শনিবার রাতের ঘটনার পরে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন প্রকল্পের কর্মীরা।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যটমিক এজেন্সির প্রধান রাফায়েল গ্রসি এই ঘটনায় ঘোর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। এভাবে পরমাণু কেন্দ্রে আক্রমণ হলে যে কোনওদিন বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন। পরমাণু কেন্দ্রটিতে কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, সে খবর তিনি নিয়েছেন। জানা গেছে, বাইরে ক্ষতি হলেও পরমাণু কেন্দ্রটির কোনো পাইপে লিক হয়নি। তবে একটি রিঅ্যাক্টর বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বিষয়টি নিয়ে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। পরে তিনি টুইট করে জানান, রাশিয়ার উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কথা হয়েছে। রাশিয়া যাতে ইউরোপ থেকে পরমাণু প্রকল্পের কাঁচামাল নিতে না পারে, সেই আবেদন করেছেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার পরমাণু প্রকল্পের উপরেও নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অ্যামনেস্টির দুঃখপ্রকাশ
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই দেশেরই সমালোচনা করা হয়েছিল সেখানে। রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ইউক্রেন বেসামরিক মানুষদের যুদ্ধ ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। রাশিয়ার আক্রমণের মুখে সাধারণ মানুষকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
অ্যামনেস্টির এই রিপোর্টের তীব্র বিরোধিতা করেছিল ইউক্রেন। বস্তুত, অ্যামনেস্টির ইউক্রেনের প্রধান পদত্যাগ করেছেন। ইউক্রেন জানিয়েছে, যারা আক্রান্ত অ্যামনেস্টি তাদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। আক্রমণকারীকে আড়াল করা হচ্ছে।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, আক্রান্তকে ভারাক্রান্ত করতে চায়নি তারা। ইউক্রেনের মানুষের ভাবাবেগেও তারা আঘাত করতে চায়নি। তার জন্য তারা দুঃখিত। তবে একইসঙ্গে তারা জানিয়েছে, রিপোর্টটির তথ্যে যে ভুল নেই, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত।
বেলারুশে রাশিয়ার আরো সেনা
আনুষ্ঠানিকভাবে বেলারুশ ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার সঙ্গে হাত মেলায়নি। কিন্তু প্রথম থেকেই রাশিয়াকে সবরকম সাহায্য করছে তারা। রাশিয়ার সেনার জন্য দেশের সীমান্ত খুলে দিয়েছে তারা। ইউক্রেনের সেনার দাবি, গত কয়েকদিনে বিপুল পরিমাণ রাশিয়ার সেনা বেলারুশে ঢুকতে শুরু করেছে। ফলে বেলারুশের দিক থেকে ইউক্রেনে রাশিয়া নতুন করে আক্রমণ চালাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সেনার পাশাপাশি রাশিয়া সেখানে নানারকম যন্ত্রপাতিও ঢোকাচ্ছে বলে ইউক্রেনের সেনার দাবি। তবে রাশিয়া এবিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র: ডয়চে ভেলে