আকাশপথে লন্ডন ও নিউ ইয়র্কের দূরত্ব ৫,৫৫৯ কিলোমিটা। বর্তমানে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সাত থেকে সাড়ে আট ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে। কিন্তু লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্ক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর সময় যদি কমে অর্ধেক হয়ে যায়? বুম সুপারসনিক কম্পানি সেই ব্যবস্থাই করছে।

বুম সুপারসনিক এমন একটি বিমানের নকশা তৈরি করেছে, যা মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় ব্রিটেন থেকে সোজা আমেরিকায় পৌঁছে দেবে যাত্রীদের।

সংস্থা থেকে এই বিমানটির নাম রখা হয়েছে ‘ওভারচার’। বিশ্বের দ্রুততম বিমান ‘৭৪৭’, ‘কনকর্ড-কেও গতিবেগের নিরিখে ছাপিয়ে গিয়েছে এই বিমানটি।

বুম সুপারসনিক সংস্থার কর্মীরা মজার ছলে বলেছেন, ‘কনকর্ড ও ৭৪৭ বিমান দুটির সন্তান হলে তা ওভারচার হত’। অনেকে আবার এই বিমানকে ‘সন অব কনকর্ড’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

ওভারচারের স্বাভাবিক গতিবেগ স্থলভাগের উপর ঘণ্টায় ২০৯২ কিলোমিটার হলেও জলভাগের উপর এই বিমানটি ঘণ্টায় ১২৩৯ কিলোমিটার বেগে যেতে পারবে।

বুম সুপারসনিক কম্পানির দাবি, মোট ৫১ বার নকশা পরিবর্তন করার পর এই বিমানটির ২৬ মিলিয়ন ঘণ্টা জুড়ে সিমুলেশন টেস্ট এবং পাঁচটি উইন্ড টানেল টেস্ট করা হয়েছে।

২০২৬ সাল থেকে এই বিমানটি উড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। ২০২৯ সালে প্রথম যাত্রী নিয়ে ওড়া শুরু করবে ওভারচার— এমনই পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

৬০,০০০ ফুট উচ্চতায় উঠে এই বিমানটি ৬০ থেকে ৮০ জন যাত্রী নিয়ে উড়তে সক্ষম হবে।

বুম ‘বিশেষ মিশন ভ্যারিয়েন্ট’ বিকাশের জন্য নর্থরপ গ্রুম্যান সংস্থার সঙ্গে একটি অংশীদারি চুক্তি ঘোষণা করেছে। বুম সুপারসনিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ব্লেক স্কল জানিয়েছেন, ‘বিমান পরিবহণ জগৎ গত কয়েক দশকে এত বিশাল উল্লম্ফন দেখেনি। আমাদের দূরত্ব সম্পর্কিত ধারণাগুলি ওভারচার বদলে দেবে’।

মোট চারটি ইঞ্জিন-সহ এই বিমানে শব্দদূষণ রোধের জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। কম্পানির দাবি, গতিবেগ ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে বিচার করলে এই বিমানটি বিশ্বের দ্রুততম বিমান হতে চলেছে।

ফার্নবোরো আন্তর্জাতিক এয়ার শো-তে ওভারচার বিমানের নকশা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। বুম সুপারসনিকের তরফে জানানো হয়েছে, এই বিমানটি অর্থনৈতিক দিক থেকে এবং পরিবেশগত ভাবে উপযুক্ত সুপারসনিক আকাশযান।