কেনটাকিতে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যা, ১৬ জনের মৃত্যু

ফানাম নিউজ
  ৩০ জুলাই ২০২২, ১৭:১৫

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব কেন্টাকিতে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ এক আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ১৬ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত ১০ বছরে কেনটাকিতে এতো ভয়াবহ বন্যা আর দেখা যায়নি।

কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুক্রবার এই বন্যাকে ‘একটি বড় বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করেছেন এবং স্থানীয় পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য ফেডারেল সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে এক বছরের শিশুসহ ছয়জন শিশু রয়েছে। রাজ্যে ২৩ হাজারেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।
 
বিমানে চড়ে বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শনের পর গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার বলেছেন, কেনটাকি তার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে।

তিনি বলেন, তার দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা এটি। শহরের কিছু অংশ পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং কিছু এলাকা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রবল বর্ষণের পর এই আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। গভর্নর বলেন, বন্যার কারণে কেনটাকিতে শত শত বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

কিছু এলাকায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে আট ইঞ্চি বা ২০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের প্রকাশ করা একাধিক ভিডিও থেকে দেখা গেছে, বন্যার তীব্রতা এত বেশি যে, কোথাও কোথাও বন্যার পানি ঘরের ছাদ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। রাস্তাগুলোতে এত বেশি পানি জমেছে যেন তা নদীতে পরিণত হয়েছে।

পূর্ব কেন্টাকিতে, সেইসাথে টেনেসি এবং পশ্চিম ভার্জিনিয়ার কিছু অংশে শুক্রবার মধ্যাহ্ন পর্যন্ত বন্যা সতর্কতা কার্যকর ছিল।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ওই অঞ্চলের নদীগুলো আরও উত্তাল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং আরও বিপজ্জনক আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।

সামনের দিনে আরও বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় বেসিয়ার জনগণকে একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বেসিয়ার বলেন, ঠিক কতজন আক্রান্ত বা নিখোঁজ হয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। রাজ্যের ২৮টি সড়কপথ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কিছু এলাকায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার বিকেলে গভর্নর নিশ্চিত করেছেন যে, চারজন অল্পবয়সী ভাইবোনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়জন আট বছর বয়সী এবং সবচেয়ে ছোটজন এক বছর বয়সী।

ওই শিশুদের চাচাতো বোন ব্রিটানি ট্রেজো জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার আকস্মিক বন্যায় তাদের বাড়ি ডুবে যাওয়ার পর তারা এবং তাদের বাবা-মা একটি গাছে আশ্রয় নিয়েছিল।

‘তারা একটি গাছে উঠতে সক্ষম হয়েছিল এবং ... বাবা-মা কয়েক ঘন্টা ধরে তাদের বাচ্চাদের ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু এরপর একটি বড় স্রোত এসে বাচ্চাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তবে ওই বাবা-মা বেঁচে যান। তারা প্রায় ৮ ঘন্টা ওই গাছে আটকে ছিলেন। এরপর তাদের উদ্ধার করা হয়’।

বৃহস্পতিবার বিমান দিয়ে প্রায় ৫০টি এবং নৌকা দিয়ে প্রায় ১০০টি উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। রাজ্য জুড়ে প্রায় ৩০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলছে।