শিরোনাম
ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া দখল করেছে, সেসব মুক্ত করার আগ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কোনো যুদ্ধবিরতিতে যাবে না ইউক্রেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন।
তিনি বলেন, এখন কোনো যুদ্ধবিরতিতে গেলে রাশিয়া সেই সুযোগে বিশ্রাম নিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে ফের ইউক্রেনের ওপর ঝাপিয়ে পড়বে।
সম্প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, (ইউক্রেনে) যুদ্ধবিরতি ঘোষণা কিংবা তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিদের শান্তি আলোচনাকে এগিয়ে নিতে রাশিয়া সবসময়ই ইতিবাচক। কিন্তু ইউক্রেনের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
এই অভিযোগের তীব্র সমালোচনা করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জেলনস্কি বলেন, ‘তারা (রুশ বাহিনী) আমাদের সঙ্গে কোনো কথাবার্তা না বলে এখানে এলো, জনগণকে হত্যা করল, ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করল…আর এখন বলছে— ইউক্রেন আলোচনা করতে চাইছে না!’
‘তারা মানুষ হত্যা করছে, বিভিন্ন শহরে ঢুকে সেসব ধ্বংস করে ফেলছে, তারপর বলছে- চল আলোচনা শুরু করি। কাদের সঙ্গে তারা আলোচনা করবে? পাথরের সঙ্গে? তারা রক্তস্নান করছে, তাদের সারা দেহে নিহত ইউক্রেনীয়দের রক্ত; আর এই রক্ত ধুয়ে ফেলা সম্ভব নয়। আমরা তা হতে দেব না’।
‘ক্ষুধার্ত তিমি যেভাবে তার খাবার গিলে খায়, তেমনি একে একে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল দখল করে চলেছে রাশিয়া। এই মুহূর্তে যদি যুদ্ধবিরতি কিংবা শান্তি আলোচনা শুরু হয়, তাহলে তারা কিছুদিন, কয়েক মাস কিংবা ১-২ বছর শান্ত থাকবে। তারপর ফের শুরু করবে ইউক্রেন দখলের অভিযান’।
‘আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যতক্ষণ পর্যন্ত ইউক্রেনে দখল করা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রুশ বাহিনী না সরছে, ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বা শান্তি আলোচনা— কোনোটাই সম্ভব নয়’।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার দুদিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের আজ ১৫০তম দিন। এই পাঁচ মাস সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্ক, ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিওপোল, দোনেৎস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে রাশিয়া।