সিরিয়ার বিষয় রাশিয়া-ইরানের সাহায্য চায় তুরস্ক

ফানাম নিউজ
  ২২ জুলাই ২০২২, ১০:২১

তেহরানে তিন দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উত্তর সিরিয়ায় সামরিক অভিযানে দুই দেশের সাহায্য চাইলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তিনি যে উত্তর সিরিয়ায় কুর্দিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কথা ভাবছেন, শীর্ষ বৈঠকে সেই কথা জানালেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।

তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির কাছ থেকে এ বিষয়ে সাহায্য চেয়েছেন। একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, তুরস্ক একাই ওই সন্ত্রাসবাদীদের মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে। এরদোগান অবশ্য সম্প্রতি বেশ কয়েকবার এ অভিযানের কথা বলেছেন।

এই তিন নেতার বৈঠকে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল সিরিয়া। গত কয়েক বছর ধরে তারা এ আলোচনা চালাচ্ছেন। এ প্রয়াসকে বলা হয় আস্তানা শান্তি প্রক্রিয়া।

গত কয়েক মাস ধরে এরদোগান উত্তর সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের কথা বলছেন। ইউফ্রেটাস নদীর তীরে তাল রিফাতের মতো কিছু শহর সশস্ত্র কুর্দি গোষ্ঠী পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজি) নিয়ন্ত্রণে। এরদোগান ওই শহরগুলো থেকে ওয়াইপিজিকে সরাতে চান।

এরদোগানের দাবি, ওয়াইপিজি হলো সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। তারা কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সঙ্গে যুক্ত। ১৯৮৪ সাল থেকে পিকেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। 

তুরস্কের অভিযোগ, পিকেকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওয়াইপিজি সিরিয়ায় তুরস্কের সেনার ওপর হামলা করছে।

বৈঠকে এরদোগান বলেন, তিনি তুরস্কের দক্ষিণে সিরিয়ার সীমান্তে ৩০ কিলোমিটারজুড়ে সেফজোন তৈরি করতে চান। আপনারা বলছেন, তুরস্কের চিন্তা বুঝতে পারছেন। কিন্তু শুধু এ কথাই যথেষ্ট নয়।

ইরানের প্রতিক্রিয়া

বৈঠকের পর রাইসি বলেন, আমরা চাই সিরিয়ার সরকার গোটা দেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করুক। ইউফ্রেটাসের পূর্বদিকে আমেরিকানদের উপস্থিত থাকার কোনো কারণই নেই। তাদের অবিলম্বে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে।

তিন নেতাই জানিয়েছেন, তারা সিরিয়ার সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করতে চান। তারা সিরিয়ার দুর্দশাগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষকে সাহায্য করতে চান।

পুতিন বলেন, সিরিয়ার ভবিষ্যৎ সিরিয়রাই ঠিক করবে। বাইরের থেকে কেউ কোনো নির্দেশ দেবে না।

যৌথ বিবৃতি

এই তিন নেতা একসঙ্গে বৈঠক করেন। তা ছাড়া দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও হয়েছে। তার পর তিন নেতা যৌথ বিবৃতি জারি করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে— সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় তারা একসঙ্গে কাজ করবেন। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার নামে সিরিয়ায় নতুন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করা হবে না। আর সিরিয়ায় যে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে কোনোরকম বিভেদ, রাজনীতি করা যাবে না, কোনো পূর্বশর্ত রাখা যাবে না।

সূত্র: ডয়চে ভেলে