শিরোনাম
ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে একটি সরকারি সংস্থা। দুর্নীতির একটি মামলায় বৃহস্পতিবার তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ভারতের ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
সোনিয়া গান্ধী ও তার ছেলে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে জটিল আর্থিক চুক্তির মাধ্যমে দলীয় তহবিল অপব্যবহার করে মূল্যবান রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তারা। তাদের অভিযোগ ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জনে কেন্দ্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবহার করছে।
ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) মূলত আর্থিক অপরাধ তদন্ত করে। বৃহস্পতিবার সোনিয়া গান্ধী সংস্থাটির কার্যালয়ে হাজির হলে বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে কংগ্রেসের কর্মীরা।
এই মামলায় গত জুনে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন রাহুল গান্ধী। একই সময়ে সোনিয়া গান্ধীকেও তলব করা হয়। তবে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সেসময় জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে যান তিনি। ওই সময়ে ৭৫ বছরের এই নেতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আর জুনের পরের দিকে তিনি ছাড়া পান।
এবারই প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন সোনিয়া গান্ধী। তবে রাজনৈতিক উদ্দেশে সরকারি সংস্থা ব্যবহারের যে অভিযোগ কংগ্রেস তুলেছে তা অস্বীকার করে আসছে বিজেপি।
সোনিয়া গান্ধী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা সুব্রানিয়াম স্বামী। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় তহবিল অপব্যবহার করে ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠান কেনার অভিযোগ আনা হয়।
১৯৩৮ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ড প্রকাশ শুরু করেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং রাহুল গান্ধীর প্রপিতামহ জওহরলাল নেহরু। সংবাদপত্রটি প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (এজেএল) প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৩৭ সালে। এর শেয়ারহোল্ডার ছিলেন পাঁচ হাজার স্বাধীনতা যোদ্ধা।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর নেহরু সংবাদপত্রটির বোর্ড চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। তবে সংবাদপত্রটির মতাদর্শ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে কংগ্রেস। ভারতের সবচেয়ে সুপরিচিত কিছু সাংবাদিক দৈনিকটিতে কাজ করেছেন। এতে কংগ্রেস পার্টি তহবিল যোগানো অব্যাহত রাখে।
আর্থিক কারণে ২০০৮ সালে দৈনিকটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে এটি ডিজিটাল প্রকাশনা হিসেবে ফের চালু হয়। আর বর্তমানে এটিকে অনেকেই কংগ্রেসের মুখপাত্র মনে করে থাকে।
বিজেপি নেতা সুব্রানিয়াম স্বামীর অভিযোগ গান্ধী পরিবার কংগ্রেসের পার্টি ফান্ড এবং এজেএল এর নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার দিল্লি, মুম্বাইসহ বেশ কয়েকটি শহরে রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি কিনেছে। এসব সম্পত্তির মূল্য দুই হাজার কোটি রুপি।
তবে কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে এটি ‘কোনও অর্থ ছাড়াই কথিত অর্থ পাচারের একটি অদ্ভুত মামলা’।
জুনে পাঁচ দিনে প্রায় ৫০ ঘণ্টা রাহুল গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। ওই সময়েও সেখানে বিক্ষোভ করে বিপুল সংখ্যক কংগ্রেস কর্মী।
সূত্র: বিবিসি