শিরোনাম
গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে শ্রীলঙ্কার রাজনীতি থেকে বিদায় নিলো দেশটির প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবার। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ইমেইলের মাধ্যমে সংসদের স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। এর আগে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন তার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে। ২০ বছর ধরে শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তার। মাহিন্দা সরকারের সময় তামিল বিদ্রোহীদের দমন করা হয় কঠোর হাতে।
জানা গেছে, ৭৬ বছর বয়সী শ্রীলঙ্কার এই প্রবীণ রাজনীতিক ভাই গোতাবায়ে রাজাপাকসের সঙ্গে অংশীদারত্বেরভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করেছেন। দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলী বৌদ্ধদের মধ্যে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
মাহিন্দা ১৯৭০ সালে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন। শ্রীলঙ্কার সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তিনি একজন আইনজীবী ছিলেন। এরপর ২০০৪ সালে তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
এদিকে ২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়ের পরে গোতাবায়ে রাজাপাকসে এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী রাজবংশকে পুনরুজ্জীবিত করেন। এসময় তিনি মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে শুল্ক আইন পাস করেন ও প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা পুনর্বহাল করেন। তাছাড়া পরিবারের সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেন। জাতীয়তাবাদী মনোভাব কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
গত ২০ বছরের মধ্যে ১২ বছরই শ্রীলঙ্কার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেছেন রাজাপাকসে পরিবারের সদস্যরা। এসময় তারা স্বৈরতন্ত্রের তকমা পেয়েছেন। এর আগে তার ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া তার অন্য দুই ভাই দেশটির বন্দর ও কৃষি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছেন। এভাবে পাকসে পরিবারের কয়েক ডজন সদস্য সরকারের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
৪৫ বছর ধরে শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে। এর আগে একবার রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়। সংবিধানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, অন্যদিকে মন্ত্রিপরিষদেরও প্রধান। দেশটির প্রধান বিচারপতি ও পুলিশ প্রধানকেও তিনি নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট।