শিরোনাম
অর্থনৈতিক সংকট ও গণ–আন্দোলনের মধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে মালদ্বীপে গেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি সামরিক বিমানে তিনি পালিয়ে মালদ্বীপে যান।
এখন শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। আজ বুধবারই প্রেসিডেন্টের পদত্যাগপত্র গৃহীত হতে পারে।
শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যম ডেইলি মিররের খবরে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেও পদ থেকে সরে যেতে চান। তিনি অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন। ২০ জুলাই পার্লামেন্ট সদস্যদের গোপন ভোটে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।
শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মাত্র একবার পদ শূন্য হয়েছিল। ১৯৯৩ সালের ১ মে প্রেসিডেন্ট প্রেমাদাসা আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছিলেন।
গোতাবায়া পদত্যাগ করলে তাঁর জায়গায় সম্ভাব্য প্রার্থী হচ্ছেন তিনজন। তাঁরা হলেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে, শ্রীলঙ্কা পদুজানা পেরামুনার (এসএলপিপি) এমপি ডালেস আলাহাপেরুমা ও বিরোধীদলীয় নেতা সাজিদ প্রেমাদাসা।
পার্লামেন্ট ২০ জুলাই গোপন ভোট হবে। রনিল বিক্রমাসিংহে বাকি মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকতে চান। এসএলপিপির একটি অংশ তাঁকে সমর্থন করে যাচ্ছে। তবে এসএলপিপির আরেকটি অংশ তাঁকে সে পদে রাখতে চায় না। তাঁকে রুখতে তারা বদ্ধপরিকর। এসএলপিপির এ অংশের সমর্থন আছে ডালেস আলাহাপেরুমার প্রতি। এর আগে রাজনৈতিক দল এসজেবি তাদের প্রার্থী হিসেবে সাজিদ প্রেমাদাসার নাম ঘোষণা করেছে। যে প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন, তিনিই প্রেসিডেন্ট হবেন।
গত মার্চ থেকে শ্রীলঙ্কায় চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। গত শনিবার শত শত বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বাসভবনে ঢোকেন। এরপর এদিন রাতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন গোতাবায়া। ঘোষণা অনুযায়ী আজ তাঁর পদত্যাগের কথা। এর আগে তিনি দেশ ছাড়লেন।
পদত্যাগের আগেই গত সোমবার রাতে গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তারা তাঁকে আটকে দেন। পরে তিনি নৌপথে পালানোর চেষ্টা করেন। গোতাবায়ার ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপক্ষেও এদিন পালানোর চেষ্টা করেন।
শ্রীলঙ্কায় ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের সুযোগ নেই। গোতাবায়া আশঙ্কা করছিলেন, প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এ জন্য তিনি সোমবার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন। তবে অভিবাসন কর্মকর্তারা তাঁকে আটকে দেন। গোতাবায়া, তাঁর স্ত্রীসহ পরিবারের ১৫ সদস্য আরব আমিরাতের চারটি ফ্লাইট ধরতে পারেননি। পরে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের সামরিক ঘাঁটিতে ফিরে যান তাঁরা।
দেশত্যাগের আগে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। সোমবার তিনি পদত্যাগপত্রে সই করেন বলে জানা গেছে। গোতাবায়া পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেছেন। ওই কর্মকর্তা পদত্যাগপত্রটি স্পিকারের কাছে হস্তান্তর করবেন। গোতাবায়ার পদত্যাগপত্র কার্যকর হবে আজ (১৩ জুলাই) থেকে। স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের কথা জানাবেন।