আদিবাসী নারীর গায়ে আগুন দিয়ে ভিডিও ধারণ

ফানাম নিউজ
  ০৪ জুলাই ২০২২, ১৯:২১

জমি নিয়ে বিবাদের জেরে এক আদিবাসী নারীর শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তিন দুর্বৃত্ত। এ সময় বাঁচাও বাঁচাও বলে আর্তনাদ করেন ৩৮ বছরের ওই নারী। তবে তাতে মন গলেনি দুর্বৃত্তদের। উল্টো মোবাইলে সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য ভিডিও করে সেটি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। শনিবার ভারতের মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার ধানোরিয়া এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। 

সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রদেশে একটি সরকারি কল্যাণ প্রকল্পে জমি পেয়েছিল ওই নারীর পরিবার। সেটি দখল করার পরই তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার এই ঘটনা ঘটে। রামপ্যারি সাহারিয়া নামের ওই নারী বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তার অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

ভিকটিমের স্বামী পুলিশকে জানিয়েছেন, একটি মাঠে তার স্ত্রীর গায়ে আগুন দেয় তিন দুর্বৃত্ত। এ সময় ঘটনার ভিডিও ধারণ করে পরে সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়।

জেলা পুলিশ প্রধান পঙ্কজ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, শনিবার ওই নারীর স্বামী অর্জুন সাহারিয়া দেখতে পান, তার স্ত্রী একটি মাঠে পুড়ে যাওয়ার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।

ওই নারী জানান, বহু বছর আগে সরকারি কল্যাণ প্রকল্পের অধীনে বরাদ্দ পাওয়া ছয় বিঘা জমিতে চাষাবাদের জন্য ওই তিন ব্যক্তি তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। দুর্বৃত্তরাও প্রত্যেকেই অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের সদস্য।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ওই নারী অনেক আগেই জমিটি বরাদ্দ পেলেও সম্প্রতি স্থানীয় রাজস্ব বিভাগ দখলদারদের হাত থেকে জায়গাটি মুক্ত করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছিল।

তার স্বামী পুলিশকে বলেছেন, তিনি যখন তাদের খামারে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি প্রতাপ, হনুমত, শ্যাম কিরার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের একটি ট্রাক্টরে করে যেতে দেখেছেন। এক পর্যায়ে ধোঁয়া আসতে দেখে অর্জুন সাহারিয়া মাঠের দিকে দৌড়ে যান। সেখানে গিয়ে তিনি নিজের স্ত্রীকে আহত অবস্থায় দেখতে পান।

পুলিশ অফিসার পঙ্কজ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘অর্জুন সাহারিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে নাম থাকা তিন জনের মধ্যে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এই ঘটনায় মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তিনি বলেন, একজন আদিবাসী নারীর ওপর এমন ভয়ানক নৃশংসতাকে লজ্জাজনক।

অর্জুন সাহারিয়ার অভিযোগ, তিনি স্থানীয় পুলিশের কাছে এর আগেও ওই তিন জনের পরিবারের কাছ থেকে তার জীবননাশের হুমকির কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তার অভিযোগের ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।