শিরোনাম
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের প্রধান শহর সেভেরোদোনেৎস্ক থেকে নিজেদের সেনাসদস্যদের পিছু হটে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইউক্রেনের সরকার। ফলে শহরটি রুশ বাহিনী দখলে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
লুহানস্কের গভর্নর সারহি হাইদাই বিবিসিকে জানান, মূলত অস্ত্র-গোলাবারুদ ও রসদের স্বল্পতার কারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে লুহানস্কের মেয়র বলেন, ‘মাসের পর মাস ধরে নিরলসভাবে গোলাগুলি চলছে, এমন স্থানে কেবল নিয়ম রক্ষার্থে থাকার কোনো অর্থ হয় না। ফলে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী। অন্য কোনো এলাকায় এই সেনাদের মোতায়েন করা হবে’।
সম্প্রতি লুহানস্ক প্রদেশে অভিযানের গতি ও ব্যাপ্তি আরও বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী। প্রদেশের প্রধান শহর সেভেরোদনেৎস্ক ও তার লাগোয়া অপর শহর লিসিচানস্কেও চলছে রুশ সেনাদের অভিযান।
সারহি হাইদাই জানান, সেভেরোদনেৎস্ক শহরের পুরো অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। শহরের ৯০ শতাংশ ভবনে গোলার আঘাত লেগেছে এবং তার মধ্যে ৮০ শতাংশই আর ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় নেই।
পাশাপাশি, গত প্রায় চার মাস ধরে চলা যুদ্ধে নিজেদের গোলাবারুদের মজুত তলানিতে নেমেছে ইউক্রেনের।
গত ১১ জুন দেশটির সামরিক গোয়ান্দা সংস্থার উপ প্রধান ভাদিম স্কিবিৎস্কি যুক্তরাজ্যের দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রুশ বাহিনীকে ঠেকিয়ে রাখতে প্রতিদিন অন্তত ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার রাউন্ড গোলা ছুড়তে হচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনাদের। গত ৪ মাস ধরে প্রতিদিন হাজার হাজার রাউন্ড গোলা ছুড়তে থাকায় ইউক্রেন সেনাবাহিনীর নিজেদের গোলাবরুদের মজুত ফুরিয়ে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দুদিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
শুক্রবার ১২১তম দিন তথা চার মাস পূর্ণ হয়ে পঞ্চম মাসে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিওপোল, দোনেৎস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে। এই তালিকায় এবার যুক্ত হলো সেভেরোদনেৎস্ক।