শিরোনাম
নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় 'জরুরি অবস্থা' ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আত্তা তারার বলেন, এই ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি সমাজ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা।
তিনি বলেন, পাঞ্জাবে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এতে যৌন হয়রানি, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনা মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে সরকার।
তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনা মোকাবিলা করার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে সুশীল সমাজ, নারী অধিকার সংগঠন, শিক্ষক ও আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। একই সঙ্গে তিনি অভিভাবকদের প্রতি সন্তানদের নিরাপত্তার গুরুত্ব শেখানোর আহ্বান জানান।
তারার বলেন, বেশ কয়েকটি ঘটনায় অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। সরকার ধর্ষণবিরোধী অভিযান শুরু করেছে এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলে হয়রানি সম্পর্কে সচেতন করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাবা-মায়েদের সন্তানদেরকে কীভাবে রক্ষা করতে হয়, তা শেখার সময় এসেছে। তিনি বলেন, সরকার দ্রুত গতিতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বাড়াবে।
‘দুই সপ্তাহের মধ্যে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর ব্যবস্থা চালু করা হবে, যা এ ধরনের ঘটনা হ্রাস করবে', যোগ করেন তিনি।
লিঙ্গ সহিংসতা মহামারি এবং দেশের বিভিন্ন শ্রেণির নারী নির্যাতনের ঘটনা কমাতে লড়াই করছে পাকিস্তান।
গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স-২০২১ এর তথ্য অনুযায়ী, ১৫৬টি দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ১৫৩তম। এর পরেই অবস্থান করছে ইরাক, ইয়েমেন ও আফগানিস্তান।
ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর রাইটস অ্যান্ড সিকিউরিটি (আইএফএফআরএএস)-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, পাকিস্তান গত চার বছরে ১৪ হাজার ৪৫৬ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে, এরমধ্যে পাঞ্জাবে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে নারী হয়রানি, নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতা এবং নারীর প্রতি অন্যান্য বৈষম্যমূলক কর্মকাণ্ডও ব্যাপক হারে বেড়েছে।
পাকিস্তানের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে দেশটিতে কর্মক্ষেত্রে নারীদের হয়রানি এবং নারীর প্রতি সহিংসতার ৫ হাজার ৪৮টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে এবং ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৭৫১টি, ২০২০ সালে ৪ হাজার ২৭৬টি এবং ২০২১ সালে ২ হাজার ৭৮টি ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র : এএনআই