শিরোনাম
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর সেভেরোডনেস্কের ৮০ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবার পূর্ব লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সেরহাই গাইদাই এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এপি।
সেরহাই গাইদাই বলেন, অব্যাহত গোলাগুলি এবং যুদ্ধের কারণে সেভেরোডনেস্ক থেকে বেসামরিক লোকজনকে ব্যাপকভাবে সরিয়ে নেওয়া এখন সম্ভব নয়।
রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ভারী কামান ব্যবহারের অভিযোগ করে সেরহাই গাইদাই বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীকে শহরের শিল্প উপকণ্ঠের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে জ্বালাও পোড়াওয়েরও অভিযোগ করেন লুহানস্কের গভর্নর।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে লাখখানেক মানুষের শহর সেভেরোডনেস্কের এখন প্রায় ১২ হাজারের মতো মানুষ রয়ে গেছে। সংঘাত থেকে বাঁচতে বাকিরা এরইমধ্যে শহর ছেড়েছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরটিতে এখনও তীব্র লড়াই চলছে।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার গোলাবর্ষণে তাদের বাহিনী শহরের কেন্দ্রস্থল ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেভেরোডনেস্ক শহরের পূর্ণ দখল নেওয়া রাশিয়ার অন্যতম সামরিক লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।
সেভেরোডনেস্ক এবং সংলগ্ন লিসিচানস্ক শহরের নিয়ন্ত্রণ পেলে মস্কো পুরো লুহানস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ পাবে। এক টেলিগ্রাম পোস্টে গাইদাই বলেন, সেভেরোডনেস্কের তিনটি সেতুই ধ্বংস হয়ে গেছে। শহরে এখনও থেকে যাওয়া ‘বাসিন্দারা মারাত্মক কঠিন পরিস্থিতিতে’ টিকে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
শহরটি রক্ষার লড়াইয়ে নিহতদের মধ্যে সাবেক ব্রিটিশ সেনা জর্ডান গ্যাটলি রয়েছেন বলে রবিবার নিশ্চিত করেছে তার পরিবার। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, শহরটির জন্য মানুষকে যে মূল্য দিতে হয়েছে তা ‘ভয়াবহ’। তিনি বলেন, ইউক্রেনীয় সেনারা ‘আক্ষরিকভাবে প্রতি মিটার ভূখণ্ডের জন্য’ লড়াই করতে রুশ বাহিনীকে বাধ্য করেছে।
রুশপন্থী স্বঘোষিত ডোনেস্ক পিপলস রিপাবলিকের একজন সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, শহরটিতে থেকে যাওয়া ইউক্রেনীয় সেনাদের হয় আত্মসমর্পণ করতে হবে নয়তো মরতে হবে।
রাশিয়ার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, মস্কোর লক্ষ্য হচ্ছে স্বঘোষিত পিপলস রিপাবলিক অব ডোনেস্ক এবং লুহানস্ককে রক্ষা করা। ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রো পেসকভ বলেছেন, ‘সাধারণভাবে এই রিপাবলিকগুলোর সুরক্ষাই এই বিশেষ সামরিক অভিযানের মূল লক্ষ্য।’
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এই অভিযানকে অবৈধ অ্যাখা দিয়ে পুতিন ও তার ঘনিষ্ঠজনদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। একইসঙ্গে তারা কিয়েভকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে।