শিরোনাম
চীনের তাংসান শহরের একটি রেস্টুরেন্টে কয়েকজন নারীর ওপর একদল পুরুষের নৃশংস হামলার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর দেশটির মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপক সমালোচনার পর অভিযুক্তদের মধ্যে নয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনা চীনে লিঙ্গ সহিংসতা সম্পর্কে পুনরায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, রেস্টুরেন্টে একজন নারীর পিঠে হাত দেয় এক পুরুষ। হাতটি দ্রুত সরিয়ে দেন ওই নারী। এর ফলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই নারীর গায়ে হাত তোলে ওই পুরুষ। তার সঙ্গীসাথীরাও এতে যোগ দেয়। মেঝেতে ফেলে পেটানো ছাড়াও বাইরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে লাঞ্ছিত করা হয় তাকে।
এমনকি ওই নারীর সঙ্গে খেতে বসা নারীদেরও মারধর করা হয়। তাদের মধ্যে দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আরো দুজন হালকা আঘাত পেয়েছেন।
তাংসান পুলিশ জানিয়েছে, সহিংস হামলা চালানো এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে সন্দেহভাজন নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে বিস্তর আলাপ চলছে চীনের বিভিন্ন স্থানে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টেলিভিশনে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা এর আগেও এমন অপরাধ করে সাজা ভোগ করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক নারী ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, এসব কিছু আমার সঙ্গেও ঘটতে পারতো। যে কারো সঙ্গেই এমনটি হওয়ার শঙ্কা আছে।
আরেকজন ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ২০২২ সালে এসে এ ধরনের ঘটনা এখনো কিভাবে ঘটছে? দয়া করে এই অপরাধীদের সাজা দিন। কেউ যেন রেহাই না পায়।
বিবিসির চীনা মিডিয়া বিশ্লেষক কেরি অ্যালেন বলেন, চীনে নারীর প্রতি সহিংসতা নিত্যদিনের ঘটনা।
তিনি বলেন, ১০ বছর আগে আমি যখন চীনে বসবাস করতাম তখন প্রায়ই পুরুষদেরকে প্রকাশ্য দিনের আলোতে তাদের নারী সঙ্গীদের ওপর নির্যাতন করতে দেখতাম। এসময় পথচারীররা শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখত।
শুধুমাত্র ২০১৬ সালের মার্চ মাসে পারিবারিক সহিংসতাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে চীনে। ২০০১ এর আগে এমনকি শারীরিক নির্যাতনকেও বিবাহবিচ্ছেদের যৌক্তিক কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হত না।
বর্তমানে যৌন সহিংসতার বিচার হলেও অনেকে মনে করছেন এই মামলার ফল হবে হালকা সাজা এবং সামান্য জরিমানা।
চীনে এখনো যৌন হয়রানি বা নির্যাতনের ঘটনায় খুব কমই বিচার হয়। অনেক ক্ষেত্রেই নির্যাতনের শিকার নারীর বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হয়। ঘটনার প্রমাণে ভিডিও ফুটেজ না থাকলে নির্যাতিতারা বিচার পান না। গত দুই বছর ধরে চীনে অবিরাম লকডাউন থাকায় পারিবারিক সহিংসতা আরও বেড়ে গেছে।