শিরোনাম
প্রায় ৪৪ বছর রাশিয়া শাসন করেছিলেন সম্রাট পিটার দ্য গ্রেট। সাম্রাজ্য বাড়ানোর যুদ্ধে একের পর এক জয়-সাফল্যে হয়ে ওঠেন ‘দ্য গ্রেট’।
১৬৭২ সালের ৯ জুন জন্ম নেওয়া এই শাসকের ৩৫০তম জন্মদিন পালিত হয় রাশিয়ায়। সম্প্রতি রাজধানী মস্কোতে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে নিজেকে ঐতিহাসিক সম্রাট পিটার গ্রেটের সঙ্গে তুলনা করেন তিন দফায় ১৮ বছর রাশিয়া শাসন করা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এ সময় এ সম্রাট পিটারের ভূখণ্ড পুনর্দখল ফরমুলায় চলছেন বলেই ইঙ্গিত দেন তিনি।
রাশিয়ার বিখ্যাত সম্রাট পিটার দ্য গ্রেট এক সময় বিপুল পরিমাণ অঞ্চল নিজের সাম্রাজ্যভুক্ত করেছিলেন। পিটারের গুণগান করতে গিয়ে পুতিন বলেন, তিনিও পিটারের মতোই দেশের জমি পুনরুদ্ধারের কাজে নেমেছেন।
এ সময় ইউক্রেনবিষয়ক কর্মকাণ্ডকে পিটার দ্য গ্রেটের সুইডেনের বিরুদ্ধে ১৮ শতকের যুদ্ধের সময় বাল্টিক উপকূল জয়ের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। ওই যুদ্ধে সুইডেনের একটি অংশ দখল করে নেন সম্রাট পিটার।
পরে নিজের নাম অনুসারে ওই শহরের নাম রাখেন সেন্টপিটার্সবার্গ এবং রাজধানী ঘোষণা করেন। পুতিনের জন্মও সেই সেন্টপিটার্সবার্গেই। জন্ম-অনুষ্ঠানে পিটারের রাজ্য সম্প্রসারণকেও দখল বলেননি পুতিন।
তরুণ উদ্যোক্তাদের তিনি বলেন, ‘সুইডেনের সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি (পিটার দ্য গ্রেট) কারো কাছ থেকে কিছু দখল করেননি। তিনি সেগুলো পুনরুদ্ধার করেছিলেন। এমনকি তিনি যখন সেন্টপিটার্সবার্গ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং এটিকে রাশিয়ার রাজধানী ঘোষণা করেছিলেন তখন ইউরোপের কোনো দেশই এই অঞ্চলটিকে রাশিয়ার অন্তর্গত বলে স্বীকৃতি দেয়নি।
সবাই এটিকে সুইডেনের অংশ বলে মনে করত। কিন্তু অনাদিকাল থেকে ফিনো-ইউগ্রিক জনগণের পাশাপাশি স্লাভরা এখানে বসবাস করত।’ পুতিনের এই বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছে ইউক্রেন।
তাদের অভিযোগ, এ কথা বলে পুতিন দখল করা অঞ্চলকে বৈধতা দিতে চাইছেন। কিন্তু বিশ্ব কূটনীতিকরা তা মানতে পারে না। কূটনীতিকদের ঠিক করে নিতে হবে, কোথায় তারা সীমান্ত চিহ্নিত করবেন।
মারিউপোলে কলেরা প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা-ব্রিটেন : রাশিয়ার দখলে থাকা মারিউপোলে কলেরার প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। শহরটিতে জনগণের মৌলিক সেবা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছে রাশিয়া। শুক্রবার এক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক টুইট বিবৃতিতে বলা হয়, শহরের মানুষ বড় ধরনের কলেরা প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকির মুখে।
এর মূল কারণ হচ্ছে, চিকিৎসাব্যবস্থা ইতোমধ্যে ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে। ইউক্রেনের আরেক শহর খেরসনও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন। এদিকে ইউক্রেন আক্রমণের পর রাশিয়াকে নিজেদের জন্য হুমকি মনে করছে ফিনল্যান্ড।
সে কারণে রাশিয়া সংলগ্ন পূর্ব সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা করছে দেশটি। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বাঁধ নির্মাণের জন্য অনুমতি পেতে সীমান্ত আইন সংশোধনের পরিকল্পনা করেছে ফিনল্যান্ড সরকার। রয়টার্স।
পশ্চিমাদের জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছে ফিনল্যান্ড। সে কারণে রাশিয়া ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে শত্রুভাবাপন্ন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধের ইতিহাসও রয়েছে।
বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সীমান্ত রেখা কেবল কিছু চিহ্ন ও প্লাস্টিক লাইন দিয়ে নির্ধারণ করা রয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে সাম্প্রতিক টানাপড়েনের দরুন নড়েচড়ে বসেছে ফিনল্যান্ড।
তদুপরি, আশঙ্কা রয়েছে-রাশিয়া সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিনল্যান্ডের দিকে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নও বেলারুশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছিল। ওই সময় মধ্যপ্রাচ্যে, আফগানিস্তান এবং আফ্রিকার হাজার হাজার অভিবাসী পোলিশ সীমান্তে আটকে পড়ে।
সূত্র: যুগান্তর