শিরোনাম
করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায়। কিন্তু করোনা যখন কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছিল তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ খাদ্য সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ইতোমধ্যে এর প্রভাব পড়েছে। অনেক দেশে দেখা দিয়েছে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি। সাধারণ মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে।
মূলত ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের কারণে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বজুড়ে খাদ্যের ১০ ভাগের এক ভাগ সরবরাহ করে। ইউক্রেন আন্তর্জাতিক বাজারে গম এবং ভোজ্যতেলের গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী একটি দেশ। কিন্তু যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে এই দুই পণ্যের রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ, ইউক্রেনের প্রধান বন্দরগুলোর ওপর অবরোধ তৈরি করেছে রাশিয়া।
জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেন থেকে খাদ্য রপ্তানি বন্ধ থাকলে বিশ্বের অনেক দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থায় বিশ্বে খাদ্য সংকট দূর করতে নতুন করে প্রস্তাব দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও রাশিয়া বলছে, বিশ্বজুড়ে খাদ্যের যে সংকট দেখা দিয়েছে তা মস্কোর ভুলে নয়। তারপরও শস্য ও সার রপ্তানির মধ্যমে খাদ্যের ঘাটতি দূর করতে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত মস্কো। তবে এক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘিরের সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন এসব কথা বলেন। পুতিন বলেন, কৃষি সংকটের ক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর অভিযোগ ভিত্তিহীন। করোনায় উৎপাদন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে মূলত সংকটের সূচনা হয়। কিন্তু ইউক্রেনে সংঘাত শুরু হওয়ার পর রাশিয়াবিরোধী নিষেধাজ্ঞার ফলে সংকট ত্বরান্বিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সার ও শস্য রপ্তানির মাধ্যমে খাদ্য সংকট এড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে রাশিয়া প্রস্তুত। কিন্তু সে জন্য পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত এ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহার করতে অভিযান শুরুর দুই মাস আগে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো। কিন্তু সেই কৌশলও কোনো কাজে আসেনি। অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া এবং তার দু’দিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সূত্র : বিবিসি, আরটি