শিরোনাম
জনসম্মুখে বের হলে নারীদের বোরকা পরার পর অবশ্যই মুখ ঢাকতে হবে, আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের সম্প্রতি জারি করা এমন আদেশ নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ মে) বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যরা। একই সঙ্গে অতীতের কট্টরপন্থি শাসনের নীতিতে প্রত্যাবর্তন ও নারীদের প্রতি অন্যান্য বিধিনিষেধ বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হবে।
আফগানিস্তানে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত, ডেবোরা লিয়ন্স বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের নরওয়ে মিশনের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে আফগানিস্তানের মানবাধিকার ইস্যু ও নারীদের স্বাধীনতার বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠক করার জন্য।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের পূর্বের শাসনকালে নারীদের মুখ ঢেকে বাইরে বের হওয়ার নিয়ম ছিল। নারীরা বাইরে কাজ করতে পারতেন না সে সময়, এমনকি মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু গতবছর আগস্টে তালেবান কাবুল দখলের পর তারা নারী অধিকারকে সম্মান করার প্রতিশ্রুতি ব্যিক্ত করেছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসছে তারা।
যদিও গত মার্চে তালেবান সরকার জানায়, উচ্চ মাধ্যমিকের মেয়েদের জন্য স্কুল খোলা হবে, তবে তাদের জন্য আলাদা করে নিয়মকানুন চালুর পর।
কিন্তু গত শনিবার তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা আফগান নারীদের প্রকাশ্য স্থানে মুখ-ঢাকা বোরকা পরতে হবে বলে আদেশ জারি করেন। গত কয়েক দশকের মধ্যে আবারও দেশটিতে এমন আদেশ জারি হলো। কোন নারী এই নিয়ম না মানলে এবং সরকারের হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করলে তার পরিবারের পুরুষ সদস্য বা অভিভাবকের কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
আফগানিস্তানে অধিকাংশ নারী এমনিতেই বোরকা পরেন। তবে অনেক নারীকে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে, কেবলমাত্র মাথার চুল ঢাকার জন্য কিছু পরতে দেখা যায়। অনেকে সেটি পড়তেন না। কিন্তু বোরকা নিয়ে এবার বোরকা নতুন নির্দেশ জারি করে দেশটির ধর্মীয় নীতি-নৈতিকতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তালেবান কর্মকর্তারা এই নির্দেশনাকে ‘পরামর্শ’ হিসেবে বর্ণনা করলেও এটি না মানলে ধাপে ধাপে কি ঘটবে, তা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
প্রথমত, কেউ যদি বোরকা না পরে তাদের বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে কর্মকর্তারা ঐ নারীর স্বামী, ভাই বা পিতার সঙ্গে কথা বলবেন। দ্বিতীয় ধাপে ঐ নারীর পুরুষ অভিভাবককে সরকারি দপ্তরে ডেকে পাঠানো হবে। তৃতীয় ধাপে ঐ পুরুষ অভিভাবককে আদালতে নেওয়া হবে এবং তিন দিন পর্যন্ত সাজা হতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি