১৪ বছর পর সৌদি আরব সফরে এরদোয়ান

ফানাম নিউজ
  ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১৫:১০

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান ১৪ বছর পর সৌদি আরব সফরে গেলেন। 

এরদোয়ানের অফিস জানিয়েছে, সৌদি আরবের রাজা সালমানের আমন্ত্রণেই তার এই সফর। তুর্কি প্রেসিডেন্টের আশা, এই সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার টানাপোড়েন কাটিয়ে সম্পর্কের একটি নতুন যুগের সূচনা হবে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টর দপ্তর জানিয়েছে, সৌদি বাদশাহের আমন্ত্রণে দেশটিতে সফর করছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। মূলত আঙ্কারা ও রিয়াদের মধ্যে পুরনো উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যেই এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়। অভিযোগের আঙুল ওঠে যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমানের বিরুদ্ধেও। খশোগিকে হত্যা নিয়ে তুরস্ক ও সৌদি আরবের বয়ান ছিল আলাদা। এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। খাশোগি হত্যার পর এই প্রথম সৌদি আরব সফরে গেলেন এরদোয়ান।

সাংবাদিক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী এই দেশ দুটির মধ্যে কয়েক বছর ধরে চলে আসা বৈরিতা তুর্কি নেতার এই সফরের মাধ্যমে কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। অবশ্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈরিতা লক্ষ্য করা গেলেও এ দুটি দেশের মধ্যে একসময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

সৌদি আরব যাওয়ার আগে এরদোয়ান বলেছেন, তার এই সফরের উদ্দেশ্য দুই দেশের রাজনৈতিক, সামরিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উন্নতি করা। খাশোগি হত্যার পর দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। এরদোয়ান বলেছেন, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, খাদ্যসুরক্ষা, প্রতিরক্ষা ও আর্থিক ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতা আরো বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে তিনি যাচ্ছেন।

২০২০ সালে সৌদি আরব তুরস্কের জিনিস আমদানির উপর অঘোষিত বয়কট জারি করেছে। এর ফলে সৌদিতে তুরস্কের জিনিস আমদানি ৯৮ শতাংশ কমে গেছে। এই সফরের ফলে কি সেই বয়কট উঠবে?

তুরস্কের অর্থনীতি রীতিমতো চাপে আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের আগে থেকেই তুরস্কে জিনিসের দাম ভয়ংকরভাবে বেড়েছে। এরদোয়ানের আর্থিক নীতি সমালোচনার মুখে পড়েছে। ২০২১-এর পর থেকে এরদোয়ান যে নীতি নিয়ে চলেছেন, তার ফলে মুদ্রাস্ফীতি ৬০ শতাংশ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পর অর্থনীতির উপর চাপ আরো বেড়েছে। এরদোয়ানের সফরের ফলে সৌদি আর্থিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে বলে আশা করছে তুরস্ক।

এরদোয়ানের সফরের ফলে তুরস্কে সৌদি আরবের বিনিয়োগ বাড়বে বলে তুরস্কের আশা। তাছাড়া সিরিয়া, লিবিয়া নিয়ে তুরস্ক আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা কোণঠাসা। এই অবস্থায় সৌদি আরবের সমর্থন তাদের কাছে জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্র: দেশ রূপান্তর