শিরোনাম
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ হামলার তিন বছরের মধ্যেই আরেকটি ভয়ঙ্কর হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন আল-কায়েদার সাবেক শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন।
কিন্তু ৯/১১ নামে পরিচিত ওই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র দেশব্যাপী নিরাপত্তা জোরদার করায় লাদেনের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নেলি লাহুদের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি টেলিভিশন সিবিএস নিউজ এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে। খবর আরব নিউজের।
নেলি লাহুদ বলেন, আগের হামলায় যাত্রীবাহী বিমান ব্যবহার করলেও পরের হামলার জন্য প্রাইভেট বিমান বেছে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
পরের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল দ্রুতগামী ট্রেন, যাতে একসঙ্গে বহু প্রাণহানি ঘটানো যায়।
সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯/১১ হামলায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এত বড় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি। ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে গোপনে অভিযান চালিয়ে ওই হামলার মূল হোতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কমান্ডো বাহিনী নেভি সিলের সদস্যরা।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে নেভি সিলের কিছু তথ্য–উপাত্ত প্রকাশিত হয়েছে। তাতে জানা গেছে, ৯/১১ হামলার পর যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের পরিবর্তে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে যুক্তরাষ্ট্রের ভিতর ৯/১১ হামলার মতোই আরেকটি হামলা চালানোর একটি পরিকল্পনা করেছিল সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদা।
ওই তথ্য-উপাত্তে আরও জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১২ মিটার রেললাইনের অংশ কেটে ফেলতে লাদেন তার অনুসারীদের উদ্বুদ্ধও করেছিলেন। আর ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ট্রেনের শত শত যাত্রীর প্রাণহানি ঘটতে পারত।
পাকিস্তানের দুর্গম অঞ্চলে লুকিয়ে থাকা আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিল অভিযানটি পরিচালনা করে। এ সময় লাদেনের লেখা হাজার হাজার ব্যক্তিগত চিঠি ও নথি উদ্ধার করে নেভি সিল।
এসব নথি যাচাই-বাছাই করেন বিশেষজ্ঞ নেলি লাহুদ সম্পতি বিষয়টি নিয়ে সিবিএসকে প্রায় এক ঘণ্টার সাক্ষাৎকার দেন। তিনি বলেন, আল-কায়েদা ধারণাই করতে পারেনি যে নাইন ইলেভেন হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের যুদ্ধে নামবে।
নাইন ইলেভেনের পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র, যার অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে হামলা করে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টুইন টাওয়ারের নৃশংস ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া পদক্ষেপ আল-কায়েদাকে হতবাক করে। লাদেনের লেখা চিঠিতে এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন নেলি লাহুদ।
তিনি বলেন, লাদেন মনে করেছিলেন মুসলিম অধ্যুষিত আফগানিস্তানে হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ রাস্তায় নেমে এসে দেশটির সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাবেন।
কিন্তু ওসামা বিন লাদেনের ওই ধারণাটি ভুল ছিল বলে জানান নেলি লাহুদ। আল-কায়েদা কর্মীদের কাছে লেখা সেসব চিঠি নিয়ে সাক্ষাৎকারের কথা বলেন নেলি লাহুদ।
টুইন টাওয়ারে হামলার পর প্রায় তিন বছর পালিয়ে থাকার কারণে আল-কায়েদা সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি বিন লাদেন। ২০০৪ সালে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ হয় তার। তখনই তিনি যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে হামলার পরিকল্পনা করেন।