সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নৃশংসতার তদন্ত জাতিসংঘ করবে?

ফানাম নিউজ
  ২২ এপ্রিল ২০২২, ১৫:৩৮

বিভিন্ন কারণে বলা যায় এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সংগঠিত নৃশংসতার অভিযোগের একটি আনুষ্ঠানিক তদন্ত অবশ্যই হওয়া উচিত। এটাই হবে আন্তর্জাতিক আইন বজায় রাখার পূর্বশর্ত।

সম্প্রতি ইরানের সংবাদমাধ্যম প্রেসটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাকা শহরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় যে নৃশংসতার ঘটনা ঘটেছে তার আনুষ্ঠানিক তদন্ত চেয়ে জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে সিরিয়ার সরকার।

সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টকে সম্বোধন করে দুইটি অভিন্ন বার্তায় লিখেছে, বিষয়টির মানবিক, রাজনৈতিক ও আইনি দিকগুলোর ওপর আলোকপাত করার সময় এসেছে।

মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের জুন থেকে অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র রাকা শহরে বোমা হামলা চালায়। এতে পুরো শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। মারা যায় হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক।

সে সময়ের ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে বার্তা সংস্থা এপি বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পুরো এলাকার চিত্র ধারণ করতে তারা ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করে। যাতে দেখা যায় এক সময়ের সমৃদ্ধশালী শহরটির কঙ্কালে মতো পড়ে আছে।

সে সময় দামেস্কে নিয়োজিত জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা লিন্ডা টম বলেন, যুদ্ধের ফলে শহরটির ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে।

তাছাড়া সিরিয়ার বেশ কিছু গণমাধ্যমেও একই ধরনের নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও তথাকথিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের অপারেশনের কথা বলা হয়। এসময় মার্কিন হামলায় বাগুজে নারী ও শিশুসহ ৭০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়।

সিরিয়ায় এ ধরনের হামলা অহরহ চালানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পরিচালিত এসব হামলার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জাতিসংঘের স্বীকৃত সিরিয়ান সরকারের অনুমতি ছাড়াই দেশটিতে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি ও হস্তক্ষেপ স্পষ্টভাবেই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আইন বলে যদি কিছু থাকে তাহলে অবশ্যই সিরিয়ার রাকায় যে নৃশংসতা সংগঠিত হয়েছে তার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত।

আন্তর্জাতিক আইনকে প্রায়ই লঙ্ঘন করতে দেখা যায়। এমনকি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকেও। এসব আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি করা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় নিয়মভিত্তিক বিশ্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে কথা বললেও ক্রমাগত ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়ম উপেক্ষা করে।

অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে না পারলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আরও বাড়ে। রাকার পরে সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকা, ইরাক ও আফগানিস্তানেও অভিযান চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশেও যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসব অভিযোগের তদন্ত কী জাতিসংঘ করবে?।

সূত্র: আরটিতে প্রকাশিত মতামতের আলোকে