শিরোনাম
নাটকীয় পরিস্থিতিতে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ইমরান খান। আজই সংসদে নির্ধারিত হবে কে হচ্ছেন পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। যিনিই ক্ষমতায় আসুন না কেন, কঠিন তিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে তার সরকার। ভঙ্গুর অর্থনীতি, দেশের ক্রমবর্ধমান জঙ্গিবাদ এবং সাবেক মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে নড়বড়ে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করার পরিকল্পনাই থাকবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর এজেন্ডার শীর্ষে। এএফপি।
পাকিস্তানের সমস্যাগুলো আগের অবস্থানেই রয়ে গেছে। সাড়ে তিন বছর আগে যে চ্যালেঞ্জগুলো মাথায় নিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট কিংবদন্তি ইমরান খান, ঠিক সেখান থেকেই নতুন করে পথচলা শুরু করতে হবে নতুন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে।
ভঙ্গুর অর্থনীতি : পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনীতি ঐতিহাসিকভাবে ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। বৈদেশিক ঋণজর্জরিত পঙ্গু অর্থনীতির চলমান মুদ্রাস্ফীতি গত তিন বছর ধরেই প্রবৃদ্ধিকে স্থবির করে রেখেছে। এ কারণে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নের সম্ভাবনা দিনদিনই সঙ্কুচিত হয়ে এসেছে। ইসলামাবাদের একটি গবেষণা সংস্থা পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্সের (পিআইডিই) ভাইস-চ্যান্সেলর নাদিম উল হক বলেন, ‘আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। এই অর্থনীতিকে ইউটার্ন করাতে আমূল নীতি সংস্কার প্রয়োজন।’ মুদ্রাস্ফীতি ১২ শতাংশের ওপরে ঠেকেছে। বৈদেশিক ঋণ ১৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার-যা মোট জিডিপির ৪৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে রুপি ও ডলারের অবমূল্যায়ন ১৯০-এ এসে দাঁড়িয়েছে।
জঙ্গিবাদের উত্থান : আফগানিস্তানে ক্ষমতা গ্রহণকারী জঙ্গিদের সঙ্গে শেকড় রয়েছে পাকিস্তানি তালেবানদের। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হামলা বাড়িয়েছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী। তারা রমজান মাসে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের হুমকি দিয়েছে-যা রোববার থেকে শুরু হয়েছে। অতীতেও একের পর এক খুনের সঙ্গে এই গোষ্ঠী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। জঙ্গিদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন ইমরান খান। কিন্তু গত বছর তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) জঙ্গিদের সঙ্গে এক মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পরও তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।
বিদেশি সম্পর্ক : ইমরান খান দাবি করেছেন বিরোধীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তাকে অপসারণ করেছে আমেরিকা। এ কারণে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়া লাগাতে আগামী সরকারকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। যেদিন রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল, সেদিনই মস্কো সফরে গিয়ে পশ্চিমাদের চক্ষুশূল হয়েছেন ইমরান। এমনকি মানবাধিকার রেকর্ডের প্রতিবাদে অন্যরা যখন চীনকে বয়কট করেছিল-তখন বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানকারী কয়েকজন বিশ্বনেতার মধ্যে ইমরানও ছিলেন। তবে ভবিষ্যৎ সরকারের জন্য আশার প্রদীপ নিভু নিভু হলেও কিছুটা জ্বলছে সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার ভূমিকায়। তিনি মার্কিনিদের মন জোগাতে ভিন্ন কৌশলে এগোচ্ছেন।