উত্তরপত্র দেখে হতভম্ব পরীক্ষক!

ফানাম নিউজ
  ১১ এপ্রিল ২০২২, ১১:২৩

করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে শুরু হয় অনলাইনে ক্লাস। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে চলে আসে স্মার্টফোন। 

ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে চলে যোগাযোগ, পড়াশোনার আলাপ। আর এতেই অভ্যস্ত হয়ে পরে শিক্ষার্থীরা। যার প্রতিফলন দেখা মেলে পরীক্ষার খাতায়।

যেমনটি হয়েছে ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। করোনা প্রাদুর্ভাব কমার পর দেশটিতে স্কুল-কলেজ খুলেছে। এখন চলছে পরীক্ষা। আবার কোথাও কোথাও পরীক্ষা শেষে দেখা শুরু হয়েছে খাতা। শিক্ষকরা সেই খাতা দেখে অবাক।

কারণ সেখানে কেউ লিখেছে, ‘ডিয়ার সুমি, ফাস্ট নো মেনি মেনি শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। দেন লকডাউন হোয়েন কাটালে?’ এটি একটি মাধ্যমিকের ইংরেজি উত্তরপত্রের লেখা।

আবার কারও লেখা, ‘আই হোপ ইউ? হোপ ইউ আর ফাইন? আই ওয়ান্ট টু শেয়ার উইথ ইউ অ্যাবাউট...’।

এসব লেখার বিষয়ে ভারতের শিক্ষকরা বলছেন, হোয়াটসঅ্যাপে যেভাবে কথা চালাচালি হয়, সেভাবে লিখছে শিক্ষার্থীরা। তারা ইংরেজিতেই লিখেছে। কিন্তু বাক্যের গঠন, শব্দ বিন্যাস অবাক করার মতো। শিক্ষকরা এই ধরনের লেখাকে ‘হোয়াটসঅ্যাপ ল্যাঙ্গুয়েজ’ বলছেন।

এক পরীক্ষকের কথায়, পরীক্ষার্থীদের অনেকেই সাদাখাতা জমা দিয়েছে। কেউ আবার হিজিবিজি লিখে ভরিয়েছে খাতা।

তিনি বলেন, হোয়াটসঅ্যাপে যেমন ইংরেজি-বাংলা মিশিয়ে জগাখিচুড়ি ভাষায় অনেকে লেখে, পরীক্ষার্থীদের একাংশ সেই ভাষাতেই উত্তর লিখেছে। সব অর্থহীন বাক্য।

শিক্ষক মহলের পর্যবেক্ষণ, করোনার কারণে দীর্ঘ সময় একটা বড় অংশের ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না। দীর্ঘ অভ্যাসেই উত্তরপত্রে হিজিবিজি লেখা। আবার অনলাইন পড়াশোনার কারণে ছাত্রছাত্রীরা অনেকটা হোয়াটসঅ্যাপ নির্ভর হয়ে পড়েছে। তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে উত্তরপত্রে।

পশ্চিমবঙ্গের শালবনি গ্রামের মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূন পড়িয়া বলেন, দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে। অনেকে ভুলে গেছে পরীক্ষার খাতা মেসেজ লেখা বা চ্যাট করার জায়গা নয়। সেখানে অন্তত ব্যাকরণ মেনে শুদ্ধ ভাষাটা লিখতে হয়।

একই রাজ্যের আরেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান ইন্দ্রনীল আচার্য বলেন, হোয়াটসঅ্যাপে নোট পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতে ইংরেজিতে লেখার সাহস—দক্ষতা দুটোই কমে গেছে। 

সূত্র: আনন্দবাজার