শিরোনাম
উত্তর আফ্রিকার তিন দেশ- আলজেরিয়া, মরক্কো ও তিউনিসিয়ার জন্য বরাদ্দ ভিসার সংখ্যা ব্যাপক হারে কমানোর ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। এ খবর শোনার পরপরই ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে আলজেরিয়া। গত বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে আলজেরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ফরাসি সরকারের একতরফা সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানাতে রাষ্ট্রদূত ফ্রাঙ্কয়েস গৌয়েতকে ডাকা হয়েছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আলজেরীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পূর্ব-আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স। এর কারণ ও পটভূমি জানতে চায় আলজেরিয়া।
উত্তর আফ্রিকান দেশগুলোর সরকার কিছু অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে ফরাসি সরকার। ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন বলেছেন, আমরা (তিন দেশের জন্য) ভিসার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনবো।
তিনি জানান, আলজেরিয়া ও মরক্কোর জন্য ভিসা ইস্যু করা ৫০ শতাংশ এবং তিউনিসিয়ান নাগরিকদের জন্য ভিসা ইস্যু দুই-তৃতীয়াংশ কমাবে ফ্রান্স।
ফরাসি মন্ত্রী জানান, তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছেন, কারণ ওই তিন দেশ তাদের নিজেদের কিছু লোককে ফেরত নিতে চায় না। অপরাধ নাহয় উগ্রপন্থায় জড়িত অথবা বসবাসের অনুমতি না থাকায় এসব ব্যক্তিকে বহিষ্কার করেছিল ফ্রান্স।
টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে দারমানিন বলেন, যতক্ষণ আপনারা নিজেদের নাগরিকদের ফেরত না নেবেন, আমরা আপনাদের লোক গ্রহণ করবো না।
তবে ফরাসি সরকারের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ফ্রান্সের নির্বাচনী প্রচারণায় রক্ষণশীল ও ডানপন্থি শিবিরে অভিবাসন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উগ্র-ডানপন্থি প্রার্থী মেরিন লে পেন ফরাসি সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন ঠিকই। তবে অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর এমন পদক্ষেপ আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল।
মরক্কো ও তিউনিসিয়ার প্রতিক্রিয়া
মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বৌরিতা ফ্রান্সের সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায়’ মন্তব্য করে এর তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, তার দেশ ফ্রান্স থেকে বহিষ্কৃত মরক্কানদের ৪০০টি কনস্যুলার নথি ইস্যু করেছে। কিন্তু এই সংখ্যা কিছুটা কম হওয়ার কারণ, তাদের মধ্যে অনেকেই করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে রাজি হননি, যা মরক্কোয় প্রবেশের জন্য আবশ্যক।
মরক্কান মন্ত্রীর দাবি, এটি ফ্রান্সের সমস্যা, বিষয়টি তাদেরই মোকাবিলা করতে হবে।
তবে ফরাসি সরকারের এ সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কিছুটা নমনীয় অবস্থান নিয়েছে তিউনিসিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, আমরা এ অঞ্চলে সহযোগিতা করা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং ফ্রান্সের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক চমৎকার।
সূত্র: আল জাজিরা