শিরোনাম
নজর লাগবে বলে শিশুর কপালে টিপ, আর হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে পায়ে নূপুর। দক্ষিণ এশিয়ার এই সামাজিক সংস্কারকে হারিয়ে দিয়েছে ইউরোপীয় দেশ ইউক্রেনের মায়েদের সন্তানকে খুঁজে পাওয়ার অভিনব পদ্ধতি।
রুশ হামলায় বাবা-মায়ের মৃত্যু কিংবা কোনো কারণে বিচ্ছিন্ন হলে শিশুকে অন্যরা খুঁজে পেয়ে যেন সুরক্ষা অথবা ফিরিয়ে দেন-সেই লক্ষ্যে শিশুকে চিহ্নিত করেছেন দারুণ বুদ্ধিমত্তায়।
শিশুর পিঠে লিখে রেখেছেন তার নাম এবং পারিবারিক প্রয়োজনীয় পরিচয়। এমনই হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি তুলে ধরেছে ইউক্রেনের স্থানীয় গণমাধ্যম।
যুদ্ধ আক্রান্ত জটিল ও ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে সন্তানকে বাঁচাতে মরিয়া ছিলেন ইউক্রেনীয় বাবা-মায়েরা। বিশেষ করে মায়েরাই ছিলেন বেশি উদ্বেগে। সাশা মাকোভি তাদেরই একজন।
তার দুই বছরের শিশু ভিরার গায়ে ট্যাটু এঁকে লিখে দিয়েছেন জন্ম-তারিখ এবং টেলিফোন নম্বর। সেখানেই ক্ষান্ত ছিলেন না তিনি। এ ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লিখে দিয়েছেন-‘আমাদের কিছু হলে বন্ধুরা দয়া করে তাকে দেখে রাখবেন।’
আলাদা হয়ে যাওয়ার ভয়ে সাশা ভিরার জ্যাকেটে রাখা হাতে লেখা পরিচিতি কার্ডের একটি দ্বিতীয় ছবি শেয়ার করেছেন-যেখানে তার নাম, তার বাবা-মায়ের নাম এবং তাদের ফোন নম্বর দেখানো হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনেই এ কাজ করে রেখেছিলেন সাশা। তিনি বলেন, পরিবার এখন নিরাপদ। অন্যরা একই ধরনের গল্প শেয়ার করেছেন ইনস্টাগ্রামে। একজন ব্যক্তি লিখেছেন-‘যুদ্ধের প্রথম দিনে আমি আমার তিন বছরের ছেলের জন্য একই কাজ করেছি। যদিও আমরা এখন ইংল্যান্ডে তার সঙ্গেই আছি, কাগজ সবসময় তার সঙ্গেই থাকে।’ কেউ কেউ তাদের বাচ্চাদের পোশাকে যোগাযোগের তথ্য সেলাই করে রেখেছেন এবং তাদের জন্য জরুরি বিবরণসহ ব্রেসলেট তৈরি করে তা পরিয়ে দিয়েছেন।
কিয়েভ থেকে ১৩ মাইল উত্তরে ইরপিন শহরে বসবাসকারী একজন দাদি বলেছেন-তিনি বেশ কয়েকজন সেন্যকে একজন মা এবং তার ১৫ বছর বয়সি মেয়েকে ধর্ষণ করতে দেখেছেন।
ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তর জানিয়েছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটিতে রুশ হামলায় নিহত হয়েছে ১৬৫ শিশু এবং আহত হয়েছে ২৬৬ জন। ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৪৩ লাখ শিশু।
এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় এক পুত্রসন্তানের নাম রাখা হয়েছে ইয়ান জ্যাভেলিন, এক কন্যাশিশুর নাম রাখা হয়েছে শুধু জ্যাভেলিন। রাশিয়ার সেনাদের রুখতে জ্যাভেলিন অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল নামে শক্তিশালী একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মূলত যুক্তরাজ্য, আমেরিকা ও এস্তোনিয়া থেকে ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে।