শিরোনাম
স্বাধীনতার পর নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সরকার গঠনের আহ্বান জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
এর আগে দেশটির সব মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগ করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরও। তাছাড়া দর পতন হওয়ায় দেশটির শেয়ারবাজারের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।
রাজাপাকসের মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানায়, জাতীয় প্রয়োজনেই ঐক্যের সরকার প্রয়োজন। সময় এসেছে দেশের সব নাগরিক ও ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য এক হয়ে কাজ করার।
এতে বলা হয়, চলমান জাতীয় সংকট মোকাবিলায় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা সব রাজনৈতিক দলকে একত্রে কাজ করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
এর আগে গোতাবায়া রাজাপাকসেকে সর্বদলীয় অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন দেশটির সাবেক শিল্পমন্ত্রী উইমাল উইরাওয়ানসা। রবিবার পার্লামেন্টের ১১টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই প্রস্তাব দেন তিনি।
১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ায় বাইরের দেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কার সরকার।
ফলে, ভয়াবহভাবে ব্যহত হচ্ছে দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং গত বেশ কিছুদিন ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ এলাকা ১৩ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে দেশটির বেশ কিছু হাসপাতাল সার্জারি বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি সড়বাতিগুলোও জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না।
বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দ্রব্যমূল্যোরর উর্ধ্বগতি। শ্রীলঙ্কার পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে দেশটিতে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি।
সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক শ মানুষ। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী গুলিবর্ষণ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরপর দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের সরকার। চলছে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ। শনিবার সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হওয়া কারফিউ চলবে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তা সত্ত্বেও বিক্ষোভের শঙ্কায় সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সুত্র: দেশ রূপান্তর