শিরোনাম
শ্রীলঙ্কায় তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের জের ধরে চলমান সহিংস বিক্ষোভ সামাল দিতে সরকার দেশজুড়ে ৩৬ ঘণ্টার জন্য কারফিউ জারি করেছে।
শনিবার দেশটির পুলিশ বিভাগ থেকে এই কারফিউ জারির ঘোষণা দেওয়া হয়। শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
শ্রীলঙ্কা পুলিশের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে এই কারফিউ কার্যকর হবে এবং পরবর্তী সোমবার সকালে তুলে নেওয়া হবে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশটিতে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকারের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের গণবিক্ষোভ দমনে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করেন।
রাজধানী কলম্বোতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই সান্ধ্য আইন জারি আছে। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক বাহিনী তলব করেছেন।
দুদিন আগে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বাসভবনের আশেপাশে গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সহিংসতার পর দেশটিতে সর্বশেষ এসব ব্যবস্থা নেওয়া হলো যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য সহিংস প্রতিবাদ বন্ধ করা।
এর পর থেকেই দেশটিতে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরোয়ানা ছাড়াই সন্দেহভাজন যে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
এশিয়া বিষয়ক বিবিসির সম্পাদক আয়েশা পেরেরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন তাতে অনেকেই স্তম্ভিত হয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, শ্রীলঙ্কার আইনে "ব্যতিক্রমধর্মী হুমকি, বিপদ অথবা বিপর্যয়ের মধ্যে" জরুরি অবস্থা জারি করার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে ইস্টার সানডেতে গির্জায় বোমা হামলার পর জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল।
এই আইনে কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই লোকজনকে আটক করা যায়। এছাড়াও লোকজনের চলাচল ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপরেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
এর ফলে লোকজনের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে সরকার এখন হয়তো প্রতিবাদকারীদের ওপর আরো বেশি মারমুখী হয়ে উঠতে পারে।
এই আইন জারির বিরুদ্ধে আদালতে কোনো চ্যালেঞ্জ করা যাবে না, যদিও এটি ঘোষণার ১৪ দিনের মধ্যে পার্লামেন্টে অনুমোদন করাতে হবে।
সংসদে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এটি পাস করাতে তেমন অসুবিধা হবে না।
সূত্র: দেশ রূপান্তর