যে কারণে ইস্তাম্বুল-দুবাইয়ে সম্পত্তি কিনছেন রুশ ধনীরা

ফানাম নিউজ
  ৩১ মার্চ ২০২২, ১০:২১

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া রুশ ধনীরা এখন আর্থিক নিরাপত্তা খুঁজতে তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) আবাসন ব্যবসায় অর্থ লগ্নি করছেন। 

বেশ কয়েকটি আবাসন কোম্পানির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইস্তাম্বুলের গোল্ডেন সাইন আবাসন কোম্পানির সহ প্রতিষ্ঠাতা গুল গুল বলেন, আমরা এখন রাশিয়ার নাগরিকদের কাছে প্রতিদিন সাত থেকে আটটি ইউনিট বিক্রি করছি। তারা নগদ অর্থে কিনছেন, তুরস্কে ব্যাংক একাউন্ট খুলছেন বা সোনা নিয়ে আসছেন। 

দুবাইয়ের মডার্ন লিভিং প্রোপার্টি ফার্মের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) থিয়াগো কালডাস জানান, রুশ নাগরিকদের সেবা দিতে তারা রাশান ভাষা জানেন এমন তিনজন প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছেন।

তুরস্ক এবং ইউএই ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের সমালোচনা করলেও জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে নিন্দা প্রস্তাব তোলা হয়েছিল তার বিরোধিতা করেছে আঙ্কারা।

রাশিয়ার সঙ্গে দুই দেশেরই সুসম্পর্ক রয়েছে এবং উভয় দেশ এখনও রাশিয়ার সঙ্গে বিমান যোগাযোগ চালু রেখেছে। দুই দেশ সম্ভবত রুশ নাগরিকদেরকে তাদের অর্থসহ সরে আসার প্রস্তাব দিয়েছে বলেও ধারণা করছে রয়টার্স।

গত ‍মাসের শুরুতে যখন ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনারা জড়ো হচ্ছিল, তখনও আগ্রাসন শুরু হয়নি। ওই সময়েই রুশ নাগরিকরা তুরস্কে ৫০৯টি বাড়ি কেনেন। গত বছরের তুলনায় যা দ্বিগুণের কাছাকাছি বলে জানায় তুরস্কের পরিসংখ্যান অধিদপ্তর।

এ সবই পশ্চিম নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগের ঘটনা। নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ওই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন আবাসন কোম্পানির কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে রয়টার্স থেকে কয়েকজন রুশ নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, যারা বাড়ি কিনেছেন। কিন্তু সংবেদনশীল পরিস্থিতির কারণে তাদের কেউই এটা নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

তুরস্কে নতুন এসেছেন এমন অনেক রুশ নাগরিক ব্যাংকে অর্থ জমা ও স্থানান্তর করতে হিমশিম খাচ্ছেন। কারণ, তুরস্কের ব্যাংকগুলো পশ্চিম নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

লেনদেনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নিয়মকানুন অনুরসণ এবং ভিসা ও মাস্টারকার্ড থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ায় জটিলতা আরও বেড়েছে।

অবশ্য কালোটাকার প্রবেশ ঠেকাতে গত বছরই সংযুক্ত আরব আমিরাত ব্যাংকগুলোর জন্য নতুন দিকনির্দেশনা জারি করে। যেখানে অর্থের সন্দেহজনক স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পরিচয় এবং উৎস সম্পর্কে খোঁজখবর প্রক্রিয়া কঠোর করা হয়।

তুরস্ক ও আমিরাত উভয় দেশই সম্পদ ক্রেতাদের জন্য নাগরিকত্বের সুযোগ দিচ্ছে। কোনও বিদেশি আড়াই লাখ ডলারের সম্পদ কিনলে এবং তিন বছরের জন্য তা নিজের মালিকানায় রাখলে তুরস্ক তাকে নাগরিকত্ব দেবে।

আবাসনে তার থেকে কিছু কম অর্থ বিনিয়োগ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে মিলবে তিন বছরের জন্য থাকার সুযোগ (রেসিডেন্সি ভিসা)। এজন্য দুই লাখ পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার (সাড়ে সাত লাখ দিরহাম) মূল্যের অ্যাপার্টমেন্ট কিনলেই চলবে।