শিরোনাম
এতো নিষেধাজ্ঞা মধ্যেও আয় কমছেনা রাশিয়ার। ইউক্রেনের উপর হামলার কারণে রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। কিন্তু সে দেশ থেকে জ্বালানি সরবরাহের উপর নির্ভরশীলতার কারণে প্রবল চাপের মুখেও এখনো পেট্রোলিয়াম, গ্যাস ও কয়লা আমদানি বন্ধ করেনি ইউরোপ। ফলে প্রতিদিন কোটি কোটি ইউরো আয় করছে মস্কো।
কিন্তু খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউরো বা ডলারের বদলে রুবলে জ্বালানির দাম মেটানোর শর্ত চাপানোর ফলে নতুন সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। পুতিন রাশিয়ার প্রতি ‘বন্ধুসুলভ’ নয়, এমন দেশের জন্য এই শর্ত চাপাতে চান।
শিল্পোন্নত দেশগুলোর গোষ্ঠী জি-সেভেন চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ করে সেই শর্ত মানতে প্রস্তুত নয় বলে শুক্রবারই জানিয়ে দিয়েছিল। চলতি সপ্তাহে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সে দেশের সরকার ও গাজপ্রম কোম্পানিকে ৩১শে মার্চের মধ্যে প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে গ্যাসের দাম রুবলে মেটানোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করতে বলেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ক্রেতাদের জন্য বিনামূল্যে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, দাম না মেটালে গ্যাসও পাঠানো হবে না। তবে পেসকভের সূত্র অনুযায়ী ইউরোপের দেশগুলো রুশ মুদ্রায় দাম মেটাতে রাজি না হলে কী করা হবে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয় নি। তিনি বলেন, পশ্চিমা জগত রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। বাণিজ্য, অর্থনীতি থেকে শুরু করে সম্পত্তি ও তহবিল বাজেয়াপ্ত করার মতো পদক্ষেপ নিয়ে অত্যন্ত বৈরি মনোভাব দেখাচ্ছে একাধিক দেশ।
জি-সেভেনও অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে। এই গোষ্ঠীর জ্বালানির দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের ভার্চুয়াল আলোচনার পর জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেক বলেন, সব মন্ত্রীই মনে করছেন, যে এ ক্ষেত্রে রাশিয়া একতরফাভাবে চুক্তিভঙ্গ করছে। পুতিনের দাবি উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট সব কোম্পানিকে চুক্তির শর্ত মেনে চলার ডাক দিয়েছে জি-সেভেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন চলতি বছরেই রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির পরিমাণ দুই-তৃতীয়াংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। ২০২৭ সালের মধ্যে সে দেশ থেকে জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির উপর নির্ভরতা পুরোপুরি দূর করতে চায় এই রাষ্ট্রজোট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জরুরি ভিত্তিতে ইউরোপকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নিচ্ছে।
ক্রেমলিনের এমন ‘বেপরোয়া’ চালের ঝুঁকি নিয়ে জল্পনা কল্পনা চলছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে কড়া নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়ার মুদ্রার অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পুতিন আন্তর্জাতিক স্তরের লেনদেনে রুবল প্রচলনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সূত্র: দেশ রূপান্তর