রাশিয়াকে ঠেকাতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্ত করছে জার্মানি

ফানাম নিউজ
  ২৮ মার্চ ২০২২, ১৭:৩৬

রাশিয়ার মতো পরমাণু অস্ত্রধর দেশের সাম্প্রতিক আচরণের কারণে প্রতিরক্ষা কাঠামো ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিচ্ছে জার্মানি। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা জার্মানি এবং ইউরোপের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সম্পর্কে মৌলিক মনোভাব কতটা বদলে দিয়েছে, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস তা স্পষ্ট করে দিলেন।

সামরিক খাতে আর্থিক বরাদ্দ নাটকীয় মাত্রায় বাড়ানোর পাশাপাশি অত্যাধুনিক সরঞ্জাম কিনছে জার্মান সরকার। এর আওতায় ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থার আদলে গোটা দেশকে সুরক্ষার বলয়ে মুড়ে ফেলার উদ্যোগও রয়েছে।

রবিবার জার্মানির এআরডি নেটওয়ার্কের সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে শলৎস এমন উদ্যোগের কথা স্বীকার করেন। তার মতে, এমন প্রস্তুতির পেছনে সঙ্গত কারণ রয়েছে। শলৎস বলেন, এক প্রতিবেশী দেশ নিজস্ব স্বার্থ কায়েম করতে বর্তমানে বলপ্রয়োগ করতে প্রস্তুত। তাই সবাই মিলে উদ্যোগ নিয়ে সেই আশঙ্কা দূর করতে হবে। তবে সার্বিক সামরিক সজ্জা সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কোনো তথ্য দেন নি।

জার্মানির ‘বিল্ড’ সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী জার্মানি ইসরায়েলের কাছ থেকে ‘অ্যারো ৩’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ প্রণালী কেনার পরিকল্পনা করছে। ২০০ কোটি ইউরো মূল্যের এই কাঠামো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে। ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক উপরে, এমনকি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার পর্যন্ত উড়ে গিয়ে এমন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে পারে ‘অ্যারো ৩’।
 
বর্তমানে জার্মানির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ‘প্যাট্রিয়ট’ কাঠামোর সেই ক্ষমতা নেই। জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য এখনো কোনো চূড়ান্ত পরিকল্পনা প্রকাশ্যে পেশ করে নি। তবে সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-র সূত্র অনুযায়ী জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষের প্রতিরক্ষা কমিটির এক প্রতিনিধিদল রবিবারই ইসরায়েল সফর শুরু করেছেন।

রবিবারের সাক্ষাৎকারে শলৎস রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার সংলাপের উপর আরও আলোকপাত করেন। শলৎস বলেন, তিনি পুতিনকে সরাসরি রাসায়নিক বা জৈব অস্ত্র প্রয়োগ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। ইউক্রেনের হাতে এমন অস্ত্র রয়েছে বলে মিথ্যা দাবি করে রাশিয়াও নিজস্ব অস্ত্র প্রয়োগ করলে তার পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে জার্মান চ্যান্সেলর মন্তব্য করেন।

তবে তিনি আবার বলেন, ন্যাটো সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও জৈব-রাসায়নিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে প্রবল প্রতিক্রিয়ার যে হুমকি দিয়েছেন, শলৎসও তার পুনরাবৃত্তি করেন।

ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে ঢিলেমির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে শলৎস বলেন, সার্বিক সমন্বয়য়ের মাধ্যমে সে দেশকে প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। নিরাপত্তার খাতিরে গন্তব্যে অস্ত্র পৌঁছানো পর্যন্ত সে বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানানো হচ্ছে না বলে দাবি করেন জার্মান চ্যান্সেলর।

সূত্রঃ ডয়চে ভেলে ও দেশ রূপান্তর