শিরোনাম
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার রামপুরহাট মহকুমার বাগুই গ্রামে ভাদু শেখ নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে খুনের ঘটনার পর দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ১২ জন।
সোমবার (২১ মার্চ) রাত সাড় ৮টার দিকে খুন হন স্থানীয় ভাদু শেখ। এর পরপরই ছড়িয়ে পড়ে অস্থিরতা। এদিকে, এ ঘটনার পর জরুরি বৈঠক ডেকে জেলার কয়েকজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং ঘটনাস্থলে একজন মন্ত্রীকে পাঠানোর নির্দেশ দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যদিও স্থানীয় আরেক তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলের দাবি, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। তবে তার এই দাবি যে ধোপে টিকবে না তা রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত থেকেই স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। মূলত কয়লা, বালি খাদানের জন্য পরিচিত বীরভূমের রামপুরহাট মহকুমা। একই সঙ্গে ওই এলাকায় ব্যবসার দখল নিয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনাও প্রায় নিয়মিত।
ভাদু শেখের খুনের ঘটনার পর তৃণমূল কর্মীরা প্রথমে ওই এলাকার জাতীয় সড়ক অবরোধ করে এবং হত্যাকারীকে ধরতে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করে। এরপরই ওই গ্রামের একটি এলাকায় আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। রাতভর সেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করে দমকল বাহিনী। পরে ঘটনাস্থল থেকে ১২ জনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাদু শেখের খুনের বদলা নিতেই তার অনুসারীরা গ্রামে আগুন লাগিয়েছে। এতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। যদিও পুলিশ গোটা বিষয়টি নিয়ে নীরবতা পালন করছে। আর এ ঘটনায় বিশেষ তদন্তদল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হতে পারে বলে জানা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, কয়লা খাদানের টাকা ভাগাভাগি নিয়েই ভাদু শেখ খুন হন। এদিকে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে বিরোধী বিজেপি বিধায়করা এদিন অধিবেশন বয়কট করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।
চলতি মাসে পশ্চিমবঙ্গের ১০৬টি পৌরসভার ভোট অনুষ্ঠিত হয়। পৌরসভার ভোটের পর বোর্ড গঠন নিয়েও শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ উঠছে। দুই জন নির্বাচিত কাউন্সিলরও খুন হয়েছেন গত ১৫ দিনে। এবার বীরভূমে এই রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা মমতা সরকারকে নতুন করে অস্বস্তিতে ফেলবে বলেই মনে করছেন অনেকে।