শিরোনাম
শ্রীলঙ্কায় চলছে জ্বালানিসংকট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও পাওয়া যাচ্ছে না জ্বালানি তেল। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামছে মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আজ মঙ্গলবার পেট্রলপাম্পগুলোতে সেনা মোতায়েন করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার।
সরকারের মুখপাত্র রমেশ পাথিরানা বলেছেন, কেরোসিন তেল কিনতে না পারায় বিক্ষুব্ধ লোকজন কলম্বোর গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক অবরোধ করেন। এতে কয়েক ঘণ্টা সেখানে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এরপর সেনা মোতায়েন করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্টোভে রান্নার জন্য কেরোসিন না পেয়ে একদল উত্তেজিত নারী পর্যটকবাহী বাস আটকে দেন। পাথিরানা বলেন, ‘আমরা দেখেছি পর্যটকদের আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের কাছে খবর আছে, কিছু ব্যক্তি তেল মজুত করছেন। সে কারণে সরকার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ডিজেল ও পেট্রল কেনার জন্য অনেক পেট্রলপাম্পে সারা রাত মানুষ অপেক্ষা করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, জ্বালানি তেলের জন্য মানুষের লাইন বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন মেজাজ হারাচ্ছে। তাই পুলিশকে সহায়তার জন্য সোমবার রাতে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি তেলের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে কথা–কাটাকাটি থেকে ছুরিকাঘাতে এক মোটরসাইকেলচালক নিহত হন। পুলিশের তথ্যমতে, গত শনিবার থেকে জ্বালানি তেলের জন্য লাইনে দাঁড়ানো তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সিলোন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পেট্রল স্টেশনগুলোতে সেনাসদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা গত সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ার পাশাপাশি খাদ্য ও রান্নার গ্যাসের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির একটি উৎস পর্যটন। কিন্তু কোভিড–১৯ মহামারির কারণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধানতম এই খাত থেকে বলার মতো আয় হয়নি। প্রবাসী নাগরিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সও কমে গেছে।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের দপ্তরসংকট নিরসনে করণীয় নিয়ে বুধবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন। তবে বিরোধী দলগুলো এই বৈঠক বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। গত সপ্তাহেই রাজাপক্ষে জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে প্রণোদনা ঋণ চাইবে তার দেশ।