শিরোনাম
মারিউপোল শহরের প্রতিটি দিনই যেন একেকটি ভয়ংকর দিন। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বন্দর নগরীতে সারা দিন বোমা হামলা ও সংঘর্ষ চলেছে। রাস্তার ধারে প্রতিবেশীদের মরদেহ মাটিচাপা দিতে দেখা গেছে এক ব্যক্তিকে। তিনি বলছেন, তাঁরা মরদেহগুলো কোথায় রাখবেন, তা বুঝতে পারছেন না। খবর রয়টার্সের।
আন্দ্রেই নামের এক ব্যক্তি রাস্তার ধারে বিধ্বস্ত একটি ভবনের পাশে প্রতিবেশীর মরদেহ মাটিচাপা দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, তাঁরা রাশিয়ার গোলা বা গ্রেনেড হামলায় নিহত হননি। শীত, শারীরিক ও মানসিক চাপ এবং অসুস্থ অবস্থায় কয়েক সপ্তাহ ধরে কোনো চিকিৎসা না পাওয়ায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
আন্দ্রেই যেখানে প্রতিবেশীদের এসব মরদেহ মাটিচাপা দিচ্ছিলেন, তার কাছেই বেশ কয়েকটি মরদেহ নোংরা কম্বলে মোড়ানো ছিল। আন্দ্রেই আরও বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী তাঁকে ও তাঁর বন্ধুদের মরদেহগুলো শীতল বেজমেন্টে সংরক্ষিত করে রাখতে পরামর্শ দিয়েছে। তবে রাশিয়ার গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে অনেকেই এখন বেজমেন্টে আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, আজভ সাগরের তীরের এই শহরে প্রায় চার লাখ মানুষ দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আটকা পড়ে রয়েছে। তাদের কাছে পর্যাপ্ত পানি, খাবার ও বিদ্যুৎ নেই।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্থানীয় সময় গত শনিবার বলেন, রাশিয়া পুরো মারিউপোল অবরুদ্ধ করে রেখেছে। জেলেনস্কি আরও বলেন, মারিউপোলে রাশিয়া যে সন্ত্রাস চালাচ্ছে, তা সহিংসতার প্রতীক হয়ে থাকবে।
তাসের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আত্মসমর্পণের জন্য স্থানীয় সময় আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত মারিউপোলকে সময় দিয়েছে। গত তিন দিনে মারিউপোল থেকে ৫৯ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
নিজের বাড়ির বেজমেন্টে ১১ দিন ধরে বসবাস করছেন ইরিনা চেরেনকো। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কত দিন এভাবে বাঁচতে পারব, তা জানি না। আবাসিক ভবনসহ সবকিছু বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আমরা বেজমেন্ট থেকে কোথায় যেতে পারি? এখন আমাদের কাছে কিছু খাবার ও জ্বালানি কাঠ রয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে খাবার শেষ হয়ে যাবে।’
মারিউপোলের বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। তবে কিছু এলাকা এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ কারণে এখানকার বাসিন্দারা বুঝতে পারছে না অন্য শহরে যারা বসবাস করছে, তাদের ভাগ্যে কী আছে।