শিরোনাম
বুধবার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বিধান সভা নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে ভারতের পাঁচ রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতিকে বরখাস্ত করেছেন দলটির সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
তাদের সবাইকেই পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। গত সপ্তাহে এই পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পর এই সিদ্ধান্তের খবর সামনে এলো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির জেরে উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর এবং গোয়ার রাজ্য কংগ্রেস সভাপতিকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। কংগ্রেসের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, সদ্য শেষ হওয়া পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের খারাপ ফলের পর সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর দলীয় সংগঠনের বড় রদবদল করা হতে পারে।
আর সে কারণেই পাঁচ রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতিকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন সোনিয়া। এরা হলেন- উত্তরপ্রদেশের অজয় কুমার লাল্লু, পাঞ্জাবের নভজ্যোৎ সিং সিধু, উত্তরখণ্ডের গণেশ গোদীয়াল, গোয়ার গিরীশ চোড়নকর এবং মণিপুর রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি এন লোকেন সিং। অবশ্য দলীয় এই সিদ্ধান্তের আগেই মঙ্গলবার সকালে বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেন গোয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গিরীশ চোড়নকর।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের পর গত রবিবার বিকেলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার বৈঠক করে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। বৈঠক শুরুর আগে জল্পনা ছড়িয়েছিল, এবার হারের দায় নিয়ে হয়তো সভানেত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন সোনিয়া গান্ধী। সম্ভাব্য নতুন সভাপতি হিসেবে মহারাষ্ট্রের নেতা মুকুল ওয়াসনিকের নাম নিয়ে জল্পনাও শুরু হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত পদত্যাগের বার্তা দেননি সোনিয়া।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সোনিয়া জানান, দল যদি মনে করে তবে তারা তিনজনই (সোনিয়া, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা) নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। কিন্তু সোনিয়ার এই প্রস্তাব সরিয়ে তাকেই নেতৃত্ব দেওয়ার অনুরোধ করেন কংগ্রেস নেতারা।
সোনিয়া গান্ধীর এই নির্দেশে ভোটে হারের চেয়েও আরও বড় ধাক্কা খেল নভজ্যোৎ সিং সিধুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। পাঞ্জাবে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংকে সরিয়ে সিধুকে নেতৃত্বে আনে হাইকমান্ড। নির্বাচনের আগে বার বার প্রকাশ্যে এসেছে পাঞ্জাবে কংগ্রেসের দলীয় কোন্দল, অন্তর্দ্বন্দ্ব। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা নিয়েও প্রকাশ্যেই মতবিরোধ দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি এবং নভজ্যোৎ সিং সিধুর মধ্যে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি এবং নভজ্যোৎ সিং সিধুর অন্তর্দ্বন্দ্ব কংগ্রেসের খারাপ ফলাফলের অন্যতম বড় কারণ। ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের পদত্যাগের পর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছিল, নভজ্যোত সিং সিধুর হাতেই রাজ্যের দায়িত্ব দিতে পারে কংগ্রেস। কিন্তু, আদতে তা হয়নি।
চরণজিৎ সিং চান্নিকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছিলেন সোনিয়া। এরপরই দলের অন্দরেই ক্ষোভ-বিক্ষোভের খবর সামনে আসতে থাকে। বিধানসভা ভোটের ফলে ভরাডুবি। ১৮ আসন হারায় কংগ্রেস।
সূত্র: এনডিটিভি ও দেশ রূপান্তর