শিরোনাম
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে জ্বালানিখাতে। বিশ্ববাজারে লাফিয়ে বাড়ছে তেলের দাম। যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ না থাকায় কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম। আশঙ্কা করা হচ্ছে ভবিষতে এ সংকট আরও বাড়বে। তাই প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বের কোন দেশের সবচেয়ে বেশি তেলের প্রয়োজন হয়।
আন্তর্জাতিক এনার্জি এজেন্সি জানায়, ২০১৯ সালে বিশ্বে দৈনিক প্রায় ১০ কোটি ব্যারেল তেলের প্রয়োজন হয়েছে। তবে বিশ্ব চাহিদার পাঁচভাগের একভাগই প্রয়োজন হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থাৎ দেশটি দৈনিক দুই কোটি ব্যারেলের বেশি ব্যবহার করেছে। এর পরেই রয়েছে চীন ও ভারত। দেশ দুইটি যথাক্রমে দৈনিক এক কোটি তিন লাখের বেশি ও প্রায় ৫০ লাখ ব্যারেল তেল ব্যবহার করে।
এদিকে বিশ্বে প্রাকৃতিক তেলের মোট মজুত রয়েছে এক দশমিক ৫৫ ট্রিলিয়ন ব্যারেল। যার মধ্যে ভেনিজুয়েলায় তিন লাখ তিন হাজার ৮০৬ মিলিয়ন ব্যারেল, সৌদি আরবে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ব্যারেল ও ইরানে দুই লাখ আট হাজার ৬০০ মিলিয়ন ব্যারেল মজুত রয়েছে। অর্থাৎ বিশ্ব মজুতের অর্ধেকই রয়েছে এ তিনটি দেশের হাতে।
অন্যদিকে ইউক্রেনে হামলাকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার তেলসহ অন্যান্য জ্বালানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুরু থেকেই রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ করার কথা জানিয়েছে মিত্র যুক্তরাজ্যও। সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপে বাড়ছে তেলের দাম।
রাশিয়ার তেল, গ্যাস ও কয়লার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, রাশিয়ার তেলবাহী জাহাজ আর যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাশিয়া হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশ। দৈনিক ৭০ লাখ ব্যারেল বা বৈশ্বিক সাত শতাংশ তেল সরবরাহ করে দেশটি।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র গড়ে প্রতিদিন দুই লাখ নয় হাজার ব্যারেল ক্রুয়েড ও পাঁচ লাখ অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য রাশিয়া থেকে আমদানি করে। যা অপরিশোধিত তেল আমদানির ৩ শতাংশ ও মার্কিন শোধনাগার দ্বারা প্রক্রিয়াকৃত মোট তেলের ১ শতাংশ। ফলে বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রাশিয়ার তেল নিষিদ্ধ করায় যুক্তরাষ্ট্রের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বা তারা এটা পুষিয়ে নিতে পারবে।