শিরোনাম
কারিগরি ত্রুটির কারণে ভারতের একটি ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের দিকে ছুটে যাওয়ার ঘটনায় দুদেশের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই ঘটনায় নয়াদিল্লি দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে ‘চিরশত্রু’ দেশ থেকে এভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যাওয়ার ঘটনা সহজভাবে নেয়নি পাকিস্তান।
এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র দুর্ঘটনার পর এই সংবেদনশীল প্রযুক্তি পরিচালনায় ভারতের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মোয়েদ ইউসুফ। পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
শুক্রবার এই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি ভারত তাদের অস্ত্র ব্যবস্থার নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দিতে সক্ষম কিনা তা বিবেচনা করার জন্য বিশ্বকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর একদিন আগেই পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বুধবার রাতে ভারত থেকে একটি দ্রুত গতির ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে খানেওয়াল জেলার মিয়া চান্নু এলাকার কাছাকাছি ভূপাতিত হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি তিন মিনিট ৪৪ সেকেন্ডে পাকিস্তানের ভূখণ্ডের ভেতরে ১২৪ কিলোমিটার অতিক্রম করেছে। এই ঘটনায় ভারতের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে যে, যান্ত্রিক ত্রুতির কারণে একটি ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানে ছুটে গেছে। তারা এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মোয়েদ ইউসুফ এই ঘটনায় কয়েক দফা টুইট করেছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনা স্বীকার করতে দিল্লির দুই দিনের বেশি সময় লেগেছে। রক্ষণাবেক্ষণের সময় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এটি ভুলক্রমে পাকিস্তানে ছুটে গেছে বলে জানানো হয়।
তিনি বলেন, সংবেদনশীল প্রযুক্তি পরিচালনায় তারা কতটা দক্ষ তা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠে এসেছে। স্থানীয় সময় বুধবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা ৪৩ মিনিটে ভারতীয় ভূখণ্ডে একটি ‘উচ্চগতির উড়ন্ত বস্তু’ শনাক্ত করে পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা পরিচালনা কেন্দ্র।
বস্তুটি হঠাৎ প্রাথমিক গতিপথ পরিবর্তন করে পাকিস্তানি ভূখণ্ডের দিকে এগোতে থাকে এবং পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে শেষপর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে মিয়া চান্নুর কাছাকাছি আছড়ে পড়ে। এটি বিধ্বস্ত হয়ে বেশ কিছু বেসামরিক সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করলেও সৌভাগ্যক্রমে কেউ হতাহত হননি। বস্তুটি ভারত-পাকিস্তান উভয়ের আকাশপথে অনেক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী ফ্লাইট এবং বেসামরিকদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছিল।
এই দুর্ঘটনার পর পরই পাকিস্তানকে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি ভারত। এতে ক্ষেপে গেছে পাকিস্তান। দিল্লির এই দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ইসলামাবাদ।