শিরোনাম
বাস্তবতা হলো অর্থনৈতিকভাবে প্রচণ্ড চাপে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আবার ইউক্রেনে হামলার ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন চাপ অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা শক্তি। নিষেধাজ্ঞার কারণে বেড়েছে মুদ্রাস্থীতি, অনলাইন লেনদেন ব্যাহত হচ্ছে, বেড়ে গেছে কালোবাজারের ঝুঁকি।
এমন পরিস্থিতিতে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে রাশিয়া। বিশ্বের যেসব দেশ ও অঞ্চল রাশিয়ার প্রতি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ নয়’— সে দেশগুলোর একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইউক্রেনে হামলার পর যেসব দেশ ও অঞ্চল বিরুদ্ধে রাশিয়া, তার প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিকদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য উদ্যোগ নিয়েছে তাদের রাখা হয়েছে এই তালিকায়।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেসব দেশ ও অঞ্চল ‘অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপ’ নিয়েছে, তাদের তালিকা সোমবার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
রুশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বন্ধু নয়, এমন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন থেকে পর্যালোচনা করবে সরকারের একটি কমিশন।
রাশিয়ার বন্ধু নয়, এমন দেশের তালিকায় রয়েছে আলবেনিয়া, অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো, আইসল্যান্ড, কানাডা, লিশটেনস্টাইন, মাইক্রোনেশিয়া, মনাকো, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, সান মারিনো, উত্তর মেসিডোনিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, ইউক্রেন, মন্টেনেগ্রো, সুইজারল্যান্ড ও জাপান। এ ছাড়া ব্রিটিশশাসিত জার্সি দ্বীপপুঞ্জ, অ্যাঙ্গোলা, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, জিব্রালটার এলাকাও রয়েছে নিষেধাজ্ঞার আওতায়।
রুশ সরকার জানিয়েছে, এই ডিক্রি অনুযায়ী- যেসব রাশিয়ান নাগরিক এবং প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র ও তার অঞ্চল এবং পৌরসভার সঙ্গে এসব দেশের তালিকায় থাকা বিদেশি ঋণদাতাদের সঙ্গে লেনদেন আছে তারা রুবলে অর্থ প্রদান করতে পারবে। তবে, নতুন অস্থায়ী এই পদ্ধতিটি প্রতি মাসে ১০ মিলিয়ন রুবলের (বা বিদেশি মুদ্রায় একই পরিমাণ) চেয়ে বেশি অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে নিত্য নতুন নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত রাশিয়া নিজেদের ডলারের রিজার্ভের ওপর চাপ এড়াতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে ইরান ও সিরিয়াকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশের তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে রাশিয়া।
নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষক ওয়েবসাইট ক্যাস্টেলুম ডট এআই এর তথ্য অনুযায়ী, ২২শে ফেব্রুয়ারির আগে থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ২ হাজার ৭৫৪টি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
হামলার পরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও ২ হাজার ৭৭৮টি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৩২টি।
এর ফলে ইরানকেও ছাড়িয়ে গেছে রাশিয়া। ইরানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৬১৬টি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
এসব নিষেধাজ্ঞার প্রায় ২১ শতাংশ জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিলে বাকি ১৮ শতাংশ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।