শিরোনাম
গত আগস্টে কাবুল দখল করে তালেবান। ছয় মাসে আফগান পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত খারাপ হচ্ছে। জাতিসংঘের একটি প্রক্ষেপন অনুযায়ী পরিস্থিতি উন্নতি না হলে ৯৭ শতাংশ আফগান দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে। সেভ দি চিলড্রেনের এক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ২০ শতাংশ আফগান পরিবার তাদের শিশুদের কাজে পাঠিয়েছে অর্থ উপার্জনের জন্য। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টেও উঠে আসছে দেশটির শিশুদের অপুষ্টির কথা। সব মিলিয়ে প্রচণ্ড মানবিক সংকটে আছে দেশটি। দেশের সাবেক কূটনীতিকরা বলছেন, আগামী ছয় মাস বা এক বছরে এই সংকট থেকে আফগানিস্তানের উত্তরণের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে হতাশাব্যঞ্জক একটি ছবি দেখা যাচ্ছে। ছয় মাস পার হয়ে গেল। একটি দেশও এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। যা অন্ধকারাছন্ন ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আগামী ছয় মাস বা এক বছরে আফগান পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে আসবে বলে মনে হয় না। একদিকে আফগান নারীরা কষ্টে আছেন, সেখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এগিয়ে আসছে না।’
মানবিক সমস্যা ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে এবং সেটি সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটিতে খাদ্যের উৎপাদনও কমেছে। ত্রাণ সহায়তাও অপ্রতুল বলে জানান সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।
আফগান জনগণ আগেও কষ্ট করেছে। তবে এখন কষ্টের মাত্রা বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয় তবে বড় আকারে কিছু করা সম্ভব নয়। যে ত্রাণ সহায়তা যাচ্ছে সেটি যথেষ্ট নয়। এর প্রভাব বোঝা যাবে পাঁচ বা দশ বছর পরে যখন অপুষ্টিজনিত রোগী বাড়বে।
ভূ-রাজনীতি
তালেবান ক্ষমতা দখল করেছিল ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের অভিপ্রায়ে। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও দ্বারস্থ হতে হচ্ছে তাদের। আবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শর্ত জুড়ে দিয়েছে কট্টর ইসলামিক রাষ্ট্র বানানো যাবে না।
শহীদুল হক বলেন, চীন এ ব্যাপারে সাবধানে এগোচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে আফগানিস্তানকে সামলাচ্ছিল সেভাবে চীন করবে কিনা তা নিয়ে বেইজিং দোটানায় আছে। চীনের বড় চাওয়া হচ্ছে, তালেবান যেন তাদের জন্য সমস্যার কারণ না হয়।
পাকিস্তানের নিজের অর্থনৈতিক অবস্থাও ভালো নয় জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য বা ইউরোপের দেশগুলো এখনও ‘ধীরে চলো নীতি’ (ওয়েট অ্যান্ড সি) গ্রহণ করেছে।
এ বিষয়ে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, প্রথম বিষয় হচ্ছে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে তালেবানের গ্রহণযোগ্যতা। অন্য দেশগুলো সেটা দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তবে তিনি বলেন, তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যহত রাখতে হবে। বিভিন্ন চ্যানেলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, যা একটি ভালো দিক।
দেশটির নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে তালেবান তাদের আগের অবস্থান থেকে বেশ নমনীয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অবস্থার পরিবর্তনের জন্য কিছু ছাড় দিতে হবে।