শিরোনাম
ভারতীয় মুসলিম নারী সাংবাদিক রানা আইয়ুবকে ইন্টারনেটে ‘নারীবিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক’ আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে উল্লেখ করে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে এসব হয়রানির ঘটনা তদন্তের জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। খবর এএফপির
৩৭ বছর বয়সী রানা আইয়ুব অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হিন্দু জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের কঠোর সমালোচক এই সাংবাদিক। ২০০২ সালে গুজরাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার জন্য রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিযুক্ত করে একটি বইও লিখেছিলেন তিনি। ওই দাঙ্গায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থেকে মোদিকে নিষ্কৃতি দিয়েছেন তদন্তকারীরা। বর্তমানে ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লেখক হিসেবে নিয়োজিত রানা আইয়ুব।
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর প্রভাব ফেলে, এমন ইস্যু নিয়ে প্রতিবেদন করেন রানা আইয়ুব। কোভিড-১৯ মহামারি সামলাতে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা এবং কর্ণাটক রাজ্যে স্কুল ও কলেজে হিজাব নিষিদ্ধের সমালোচনা করে নিবন্ধ লিখেছেন তিনি। সম্প্রতি জাতিসংঘের নিয়োজিত কয়েকজন স্বাধীন প্রতিনিধি অভিযোগ করেছেন, কট্টরপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা অনলাইনে রানা আইয়ুবকে নানাভাবে আক্রমণ করছেন, হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
ওই প্রতিনিধিরা আরও বলেন, ভারত সরকার এসব ঘটনার নিন্দা জানাতে এবং তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আইনগতভাবে রানা আইয়ুবকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। তাঁর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব স্বাধীন প্রতিনিধি জাতিসংঘের মুখপাত্র হিসেবে কথা বলেন না। তাঁরা শুধু প্রতিবেদন জমা দেন।
চলতি সপ্তাহে রানা আইয়ুবকে নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। সেখানে বলা হয়, ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই হুমকি পাচ্ছেন রানা আইয়ুব।
এদিকে জেনেভায় জাতিসংঘের ভারতীয় মিশনের পক্ষ থেকে এক টুইটার পোস্টে বলা হয়েছে, স্বাধীন প্রতিনিধিদের বিবৃতিতে যে আইনি হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য জাতিসংঘের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে বলেও সতর্ক করা হয়।