শিরোনাম
সংগীত জগতে ফের শোকের ছায়া। মাত্র ১০ দিনের মধ্যে লতা মঙ্গেশকর ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পর না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ী। যাকে সর্ব স্তরের মানুষ ‘বাপ্পি দা’ বলেই সম্বোধন করতেই বেশি ভালোবাসতেন।
বাপ্পি লাহিড়ী শুধু তার গানের জন্য বিখ্যাত ছিলেন না, তিনি 'গোল্ড ম্যান' হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তিনি গলায় অনেকগুলো সোনার চেন পরতেন। দুই হাতের ১০ আঙুলেই সোনার আংটি, সোনার ব্রেসলেট।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ীম গত বছর নতুন করে সোনার গয়না কেনেননি তিনি। গয়নার পরিবর্তে তিনি সোনার কাপ-প্লেটের একটি সেটই কিনে ফেলেছিলেন।
এ বিষয়ে বাপ্পি লাহিড়ী বলেছিলেন, বহুদিনের ইচ্ছে ছিল সোনার কাপ-প্লেটে চা খাব। এবার সে শখ পূরণ হলো।
তিনি আরও বলেন, স্ত্রীকে বললাম, আমার জন্য একটা সোনার কাপ-প্লেটের সেট কিনে আনো। ও কিনেও আনল। না, এবার সোনার হার কিনিনি। সোনার অনেক গয়না তো রয়েছে আমার কাছে। তাই ভাবলাম, কাপ-প্লেটের সেট কিনে আনাটাই ভালো হবে।
২০১৪ সালে ভারতে শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। নির্বাচন কমিশনকে হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন, ৭৫৪ গ্রাম সোনা এবং ৪ দশমিক ৬২ কেজি রুপার গয়না রয়েছে তার কাছে।
২০১৪ সালে তিনি জানিয়েছিলেন, তার সোনার গয়নার বাজারমূল্য ৪০ লাখ টাকা। তার রুপার গয়নার বাজারমূল্য ছিল দুই লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি ছিল তার।
তবে গেল আট বছরে যে তার গয়না ও সম্পদের পরিমাণ অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল, তা বলা বাহুল্য।
বাপ্পি লাহিড়ী ৬৯ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে অন্যতম জনপ্রিয় নাম বাপ্পি লাহিড়ী। হিন্দিতে ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় অমর সঙ্গী, আশা ও ভালোবাসা, আমার তুমি, অমর প্রেম প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান। ২০২০ সালে তার শেষ গান ‘বাগি-৩’র জন্য। কিশোর কুমার ছিলেন বাপ্পির সম্পর্কে মামা। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরী লাহিড়ি দু’জনেই সংগীত জগতের মানুষ। ফলে একমাত্র সন্তান বাপ্পি ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মা-বাবার কাছেই পান প্রথম গানের তালিম।
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাপ্পি। তারপর দীর্ঘদিন বাংলা ও হিন্দি ছবির গান গেয়েছেন, সুর দিয়েছেন। প্রচুর সোনার গয়না পরতে ভালোবাসতেন। ছিল গায়কির নিজস্ব কায়দা, যা তাকে হিন্দি ছবির জগতে অনন্য পরিচিতি দিয়েছিল।