শিরোনাম
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০-এ আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন দেশের বরেণ্য দুই অভিনয়শিল্পী আনোয়ারা বেগম ও রাইসুল ইসলাম আসাদ।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের (চলচ্চিত্র-১) এক প্রজ্ঞাপনে ২০২০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশের চলচ্চিত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা সম্মানীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ‘আজীবন সম্মাননা’ দেওয়া হয়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের অংশ হিসেবে ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর দুজন গুণী অভিনয়শিল্পীকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
একাধারে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী আনোয়ারা বেগমের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দি। তার বাবা জামাল উদ্দিন ও মা ফরিদুন্নেসা। ষাটের দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে নৃত্যশিল্পী হিসেবে আনোয়ারার আগমন। ১৯৬১ সালে মাত্র ১৪-১৫ বছর বয়সে অভিনেতা আজিমের মাধ্যমে তিনি রূপালি পর্দায় দর্শকদের সামনে আসেন। তিনি পরিচালক ফজলুল হকের ‘আজা’ চলচ্চিত্রে প্রথম নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। পরে ছবির নাম পাল্টে ‘উত্তরণ’ রাখা হয়। এরপর আরও কিছু ছবিতে তিনি নৃত্যশিল্পী হিসেবে পারফর্ম করেন।
১৯৬৪ সালে জহির রায়হানের ‘সঙ্গম’ চলচ্চিত্র প্রথম সহ-অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন। পরের বছর ‘জানাজানি’ চলচ্চিত্রে শওকত আকবরের বিপরীতে অভিনয় করেন। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বালা’ নামের একটি চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ভাবি, চাচি, শাশুড়ি ও মায়ের চরিত্রেই বেশি সফলতা পান আনোয়ারা। দীর্ঘ ৫০ বছরের অভিনয়জীবনে সাড়ে ছয়শ’র বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
পারিবারিক নাম আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ রাইসুল ইসলাম। পর্দায় তিনি দর্শকদের কাছে রাইসুল ইসলাম আসাদ নামে পরিচিত। একাধারে বেতার, মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করা এ গুণী অভিনেতার জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৫ জুন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ছিলেন কিংবদন্তি খ্যাতিপ্রাপ্ত ক্র্যাক প্লাটুনের একজন সদস্য।
রাইসুল ইসলাম আসাদের প্রথম চলচ্চিত্র ‘আবার তোরা মানুষ হ’ মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে। তিনি নাট্য পরিচালনাও ছিলেন। তানভীর মোকাম্মেলের লালন (২০০৪) চলচ্চিত্রে তিনি লালন চরিত্রে এবং গৌতম ঘোষের মনের মানুষ (২০১০) চলচ্চিত্রে লালনের গুরু সিরাজ সাঁই চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাস অবলম্বনে গৌতম ঘোষের পদ্মা নদীর মাঝি (১৯৯৩) চলচ্চিত্রে তার কুবের চরিত্র এবং কপিলার সঙ্গে প্রেমলীলা আজও বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকদের চোখে জীবন্ত হয়ে আছে।