প্রমাণ দেখাতে না পারলে জায়েদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন আলমগীর

ফানাম নিউজ
  ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ০০:৫৯

কথায় কথায় পারভেজ ভাই, উজ্জ্বল ভাই, ফারুক এবং আমাকে দায়ী করা হয়। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ১৮৪ জন—এঁদের নাকি আমরা বাদ দিয়েছি! ছোট্ট প্রশ্ন, আমরা কমিটিতে উপদেষ্টা ছিলাম। এরপর আছে এক্সিকিউটিভ কমিটি, তারাই তো আমাদের নিয়োগ দিয়েছে। তারাই আমাদের কাছে দুই–আড়াই শ সদস্য বাদ দেওয়ার নাম নিয়ে এল।ইন্টারিভিউতে গেলাম, সেই ইন্টারভিউতে একটা হাজিরা কাগজ হয় না, সেখানে আমরা সই করেছি, মানে আমরা হাজিরা খাতায় সই করেছি। সেই সইকে টেম্পারিং করে ওরা বলছে, আমরা নাকি বাদ দিয়েছি! উপদেষ্টা পরিষদের কি সেই অধিকার বা এখতিয়ার আছে ১৮৪ জনকে বাদ দেওয়ার?’ কথাগুলো চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী, প্রযোজক এবং পরিচালক আলমগীরের।

মঙ্গলবার ঢাকার মগবাজারের একটি কনভেনশন সেন্টারে ইলিয়াস কাঞ্চন–নিপুণ প্যানেলের আনুষ্ঠানিক পরিচিতি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

কথায় কথায় তিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির এমন মিথ্যাচারের জন্য বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করার কথাও বলেন। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই আলমগীরের এই সিদ্ধান্তকে হাততালি দিয়ে সমর্থন জানান।

মিশা সওদাগর ও জায়েদ খান দুই মেয়াদে শিল্পী সমিতির দায়িত্বে থাকার সময় ১৮৪ জন শিল্পীর সদস্য পদ কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এ অভিযোগ দিয়ে ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার দাবিতে বঞ্চিত শিল্পীরা করোনার মধ্যে এফডিসির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন। ফেসবুক এবং ইউটিউবে নানা ধরনের বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর জায়েদ খান জানান, ভোটাধিকারবঞ্চিত শিল্পীদের তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে বাদ দেননি। 

সেখানে আলমগীর, ফারুক, ইলিয়াস কাঞ্চন, রিয়াজসহ অনেকেরই স্বাক্ষর ছিল। এরই মধ্যে রিয়াজ জানিয়েছেন, জায়েদ খান স্বাক্ষরের যে বিষয়টি সবাইকে বলেছেন, সেটা জালিয়াতি করে করা এবং সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। তিনি কখনোই ১৮৪ জন শিল্পীকে বাদ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন না। বরং মিশা–জায়েদ ১৮৪ জনকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় রিয়াজ মিটিং থেকে বেরিয়ে আসেন। আজ শিল্পী সমিতির ইলিয়াস কাঞ্চন–নিপুণ প্যানেলের পরিচিতি অনুষ্ঠানে সই টেম্পারিংয়ের কথা বরেণ্য অভিনেতা আলমগীরও বললেন।

আলমগীর বললেন, ‘সমিতির সদস্য বাদ দেওয়ার কাজটি এক্সিকিউটিভ কমিটির কাজ। আমরা যে ইন্টারভিউ নিয়েছিলাম, সেখানে ৫০-৬০ জন ছিলেন, বাকি ১২০ জন কোথা থেকে এলেন! মিথ্যা বলার একটা সীমা থাকা দরকার। তারপর এই প্যানেলের আরেকজন প্রার্থী, আমাদের ছোট বোন পরীমনি, কিছুদিন আগে তাঁর কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল, তার সেই সমস্যা কোর্টে চলে গেল। কোর্টে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে আগে থেকে কেউ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাহলে এই শিল্পী সমিতি কী করে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীমনির সদস্য পদ স্থগিত করল! তাহলে কি কোর্টের ওপরে তারা (মিশা–জায়েদ কমিটি) চলে গেলে! এসব হতে পারে না। তারা অন্যায় করেছে। তখনো বলেছে, আমি (জায়েদ খান) তো পারভেজ ভাই, ফারুক ভাই, উজ্জ্বল ভাই, আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। মিথ্যা কথা, সে আমাদের সঙ্গে ওই বিষয়ে কথা বলেনি! একের পর এক মিথ্যার প্রমাণ দিতে না পারে, তাহলে ফৌজদারি আইনে মামলা করব।’

আলমগীর বললেন, ‘মিথ্যা কতটুকু বলা যায়? মিথ্যা বলার তো সীমারেখা পেরিয়ে গেছে। কথায় কথায় অমুক ভাই, তমুক ভাইয়ের রেফারেন্স টেনে আনা! আমি ইউটিউবে দেখি, আমাদের স্বনামধন্য সাধারণ সম্পাদক, তিনি ফাইল খুলে ক্যামেরায় দেখাচ্ছেন, এখানে–ওখানে তো সবার সই আছে। আমি ওই ফাইলটা একবার দেখতে চাই। আমি ওই ফাইলটা স্বচক্ষে দেখতে চাই। যদি দেখাতে না পরে তাহলে...। ওই ফাইলটা একটা টেম্পারিং ফাইল। মানে ওটাকে জোড়াতালি দিয়ে ফটোকপি করে হয়তো কিছু করেছে, আমি জানি না। আমি ওটা দেখতে চাই। আর ওটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে ওদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কেস হবে। শুনেছি, ওরা সব সময় ভয় দেখায়, অনেক সময় অনেক বাজে কথা বলে, মিথ্যা কথা বলে। সিরিয়াসলি বলছি, আমি এর অ্যাকশন নেবই। একাই নেব।’ 

সূত্র: প্রথম আলো