মৃত্যুর আগে মা বলেছিল, তুই শিল্পী সমিতি নিয়েই থাক : জায়েদ খান

ফানাম নিউজ
  ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ২০:০৩

জমে উঠেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনী প্রচারনা। প্রতিনিয়ত এখন এফডিসিতে বাড়ছে শিল্পীদের আনাগোনা। এই প্রচারনায় অংশ নিচ্ছেন তারা। মিশা-জায়েদের প্যানেল থেকে শনিবার (২২ জানুয়ারি) একটি প্রচারণা মূলক অনুষ্ঠান হয়। সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি মিশা সওদাগরসহ আরও কয়েক শ’ অভিনয় শিল্পী। সূত্র: আরটিভি

সেই অনুষ্ঠানে শিল্পীদের উদ্দেশ্যে বক্ত্যব্য রাখেন জায়েদ খান। এ সময় তিনি গত দুই বছরে তার প্যানেলের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করেন। সেখান থেকে পাঠকের জন্য চুম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো। নিজেকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এখন একজন এতিম মানুষ। আমার মা মরার আগে বলে গেছে, ‘তোমার আর বিয়ে-শাদি লাগবে না, তুমি শিল্পী সমিতি নিয়েই থাকো।’

এখন শিল্পী সমিতি আমার কাছে একটা ভালোবাসার জায়গা হয়ে গেছে। এ জন্য এতো শত্রু। যে সমিতিতে আমি দেখছি, নিজের টাকা দিয়ে গেটে ফ্লাক্সে টাকা দিয়ে চা খেতে হয়, সেখানে এখন দুইটা কফি মেশিন থাকে, এই মিশা-জায়েদের প্যানেলের অবদান। তিনটা ফ্রিজ সমিতিতে, ২১টা লাইট জ্বলে। এটা আমরা করেছি। অনেকের এটা দেখে চোখ ছোট হয়ে গেছে, এটা দেখে। প্রথম যখন লকডাউন ছিল, এফডিসিতে ১১টা কুকুর আছে। ওরা না খেয়ে থাকতে থাকতে শুকিয়ে গেছিল। এই কুকুর গুলোকে নিজ হাতে রান্না করে খাইয়েছি প্রতিদিন।

যদি একটা মিথ্যা বলি, তাহলে আমার বাবা-মা এখন কবরে। তাদের আত্মা যেন শাস্তি পায়। আমি জীবনটা দিয়ে দিছি এই শিল্পীদের জন্য। বিনিময়ে আজকে অবহেলা, মানুষের গালি ও আমাকে খুনি সাজানো হচ্ছে একটা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। আমার একটা মাত্র বোন, তার কাছেই মানুষ হয়েছি, সে ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই বোনটার কাছেই আমি বড় হয়েছি, সে চুমু খেয়ে আমাকে বলছে, ভাই তুমি এখান থেকে ফিরে আসো, তোমাকে হারাতে চাই না।

এখান থেকে লোক পাঠিয়েছে রাত ১টার সময় শিমুর বাসায়। পাঠিয়ে বলেছে, একবার শুধু জায়েদ খানের নামটা নেন, আপনারা জায়েদ খানকে সন্দেহ করছেন। আপনাদের যা লাগবে তাই আপনাদের দেব। এখন আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করেন, গত দুইটা বছর ধরে আপনারদের জন্য আমি কি করেছি, যে এর প্রতিদান এমনটা হলো। লকডাউনে কিংবা ঈদে কার বাসায় শিল্পী সমিতির একটা প্যাকেট পৌঁছায়নি, কার বাসায় খাবার যায়নি, কার বাসায় নিজে কোরবানি দিয়ে মাংস পাঠাইনি।

আমি তো এসব বিষয় আজকে চুপ করে থাকতে পারতাম। আমি যদি কাজ কম করতাম তাহলে দুর্নামও কম হতো। অনেক কাজ করেছি বলেই অনেক দুর্নাম হয়েছে। অনেক সংগঠন আজ আমাকে ও মিশা ভাইকে বয়কট করছে, কিছু শিল্পী নামধারী লোকজনকে মুখোশ পরিয়ে এফডিসির গেটের সামনে দাড় করিয়ে আমাদের পদত্যাগ চায়। অথচ লকডাউনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছি। যেখানে নিজের বোনের বাসায় থেকে দুলাভাইয়ের বকা খেয়েছি। কারণ রিস্ক হয়ে যায়। আপনারা একটা ভুল বলেন আমার, যেটা আমি করেছি। যদি কেউ বলতে পারেন, তাহলে মাথা নত করে আমি শিল্পী সমিতি থেকে বের হয়ে যাব।

বাসা থেকেও বকা শুনতে হয় আর আপনারা শিল্পী, আপনারাও বকা দিচ্ছেন। এখন আপনারাই বলেন আমি কই যাবো? শিল্পীদের নিয়ে কাজ করাই কি আমার অপরাধ হয়ে গেল? মিশা ভাইয়ের বউ-বাচ্চা আমেরিকাতে থাকে। বারবার বলে তুমি চলে আসো এসব ছেড়ে দিয়ে, কই মিশা ভাইতো যায়নি। যেকোনো শিল্পী মারা গেলে লাশটা কাঁধে নিয়েছিল কারা। এই মিশা-ভাই আর আমি কাঁদে নিতে নিতে আজ কাঁধটা ব্যথা হয়ে গেছে। আর কত লাশ কাঁধে নেব। করোনার সময় তো ভয়ে কেউ কাছে আসেনি এটাই কি আমার অপরাধ! আপনাদের কাছেই প্রশ্ন রেখে গেলাম।

প্রসঙ্গত, আসেছ ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দুটি প্যানেলে রয়েছে। এতে মিশা-জায়েদ একটি প্যানেল ও অন্যটি ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুন প্যানেল।