শিরোনাম
এ বছর ইসরায়েলের এলিয়াট শহরে বসেছিল মিস ইউনিভার্সের ৭০তম আসর। বিশ্বের সব সুন্দরীদের পেছনে ফেলে মিস ইউনিভার্সের শিরোপা জিতেছেন ভারতের হারনাজ সান্ধু। ২১ বছর বয়সী এই তরুণীর মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন ২০২০ সালের মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর আন্দ্রেয়া মেজা। মঞ্চে সোনালি স্লিভলেস গাউনে ঝলমল করলেন হারনাজ, হিরে খচিত মিস ইউনিভার্সের তাজ তার সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সূত্র: আরটিভি
সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সবচেয়ে দামি মুকুট এটি। হারনাজের মুকুটে কী পরিমাণ হীরা আর কত দাম- এ নিয়ে চলছে আলোচনা।
জানা গেছে, হারনাজ সান্ধুর মুকুটের দাম প্রায় ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। মুকুটের ওজন এক কেজি। তাতে ১ হাজার ৭২৫টি হীরা বসানো আছে। এর আগে কোনো প্রতিযোগীর জন্য এত দামি মুকুট তৈরি হয়নি।
মিস ইউনিভার্স খেতাব পাওয়ার পর কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয় বিজয়ীকে। সঙ্গে পাওয়া যায় বেতনও। হারনাজ বর্তমানে যে সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তা শুনলে চমকে যাওয়ার মতো অবস্থা হতে পারে!
হারনাজ সান্ধু আগামী এক বছরের জন্য নিউইয়র্কের একটি বিলাসবহুল পেন্টহাউসে থাকার সুযোগ পাবেন। এখন তিনি মিস ইউনিভার্স প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এই পদের ফলে তিনি পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করার সুযোগ পেতে পারেন। তাকে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সব কর্মসূচিতে অংশ নিতে হবে। শুধু তা–ই নয়, এ সময় তার পোশাক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য- সবকিছুর খেয়াল রাখার জন্য থাকবেন বিশেষজ্ঞরা। এক বছরের জন্য হারনাজ পাবেন ব্যক্তিগত মেকআপ আর্টিস্ট। তিনি কী খাবেন, কীভাবে নিজের ত্বকের খেয়াল রাখবেন সবকিছুই দেখভালের জন্য আলাদা লোক থাকবে।
এত সব দায়িত্ব পালনের জন্য চাই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। এসবের জন্য যত টাকা লাগবে, তার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি তার অন্য আয়েরও সুযোগ বাড়বে। তাকে নিয়ে সিনেমা কিংবা বিজ্ঞাপন বানানোর পরিকল্পনা তো থাকবেই।
এবারের আসরে হারনাজের সঙ্গে সেরা তিনের লড়াইয়ে ছিল প্যারাগুয়ের নাদিয়া ফেরেইরা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার লালেলা সোয়ানে। প্রতিযোগিদের প্রশ্ন করা হয়েছিল- নানামুখী চাপ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে তরুণীদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী? এর জবাবে হারনাজ বলেন, বর্তমান সময়ে তরুণীদের ওপর সবচেয়ে বড় চাপ হচ্ছে আত্মবিশ্বাসের অভাব। নিজের ওপর বিশ্বাস থাকলে নিজেকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করা যায়। অন্যদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করা যাবে না।
তরুণীদের পরামর্শ দিয়ে হারনাজ বলেন, বেরিয়ে আসো, নিজের জন্য কথা বলো, কারণ তুমিই তোমার জীবনের নেতা। তুমিই তোমার কণ্ঠস্বর। আমি নিজেকে বিশ্বাস করি। আর এ কারণেই আজ আমি এখানে।
হারনাজের জন্ম পাঞ্জাবি পরিবারে। চন্ডীগড়ের মেয়ে পেশায় মডেল, ফিটনেস লাভার ও যোগ ব্যায়ামে পারদর্শী। ইতোমধ্যেই দুটি পাঞ্জাবি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। এর আগে ২০১৭ সালে মিস চন্ডীগড় হয়েছিলেন হারনাজ। এরপর ২০১৮ সালে ফের এমার্জিং স্টার শিরোপা পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় সেরা বারো প্রতিযোগীর মধ্যে ছিলেন। এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মিস ডিভা ইউনিভার্স ইন্ডিয়া খেতাব পান হরনাজ। এরপর মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালে ভারত প্রথম মিস ইউনিভার্স মুকুট পেয়েছিল। সেবার বিশ্বমঞ্চে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন বাঙালি কন্যা সুস্মিতা সেন। এরপর ২০০০ সালে মিস ইউনিভার্স খেতাব জেতেন লারা দত্ত। তারপর কেটে গেছে দীর্ঘ ২১ বছর। এবার ভারত পেল তার তৃতীয় মিস ইউনিভার্স হারনাজ সান্ধুকে।