বাবা শিখিয়েছে, অভিমান হলে মনের দরজা খুলে দিতে হয়

ফানাম নিউজ
  ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১৪:৩৬
আপডেট  : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১৬:০৪

১১ অক্টোবর বিকেলে হঠাৎ করেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। নাট্যব্যক্তিত্ব ড. ইনামুল হকের এই আকস্মিক প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে। মঙ্গলবার বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে ইনামুল হককে। ২০১৮ সালের ১৭ জুন বাবা ড. ইনামুল হককে নিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ লেখা লিখেছিলেন মেয়ে হৃদি হক। সেই লেখার অংশবিশেষ।

১৯৭১-এ জন্মায়নি হৃদি।


কিন্তু বাবার চোখে হৃদি মুক্তিযুদ্ধ দেখে।

অবাক হয়ে ভাবে, প্রতিদিন একটা মানুষ কী করে পারে দেশকে এত ভালোবাসতে!

স্বাধীনতার পর ড. ইনাম আর লাকী ইনাম ইংল্যান্ডে পাঁচ বছর কাটায় পড়াশোনার জন্য।


অন্য বন্ধুরা এ পাঁচ বছরে সন্তান নেয় একের পর এক- সিটিজেনশিপটা যদি পাওয়া যায়।

ড. ইনাম অটল সেখানে-

দেশের মাটিতেই জন্মাবে তার প্রথম সন্তান।

১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭০-এ বিয়ে করেছিল এই দম্পতি।

দিনটা কখনোই উদ্‌যাপিত হয় না।

তবে যাপন করে হৃদি তার বাবার সাথে- শোক দিবস।

’৭১-এর ১৪ ডিসেম্বরের কোনো এক কালো তালিকায় ড. ইনামের নামটাও ছিল হয়তো।

হয়তো কেন! নিশ্চয়ই ছিল।

২৩ মার্চের উত্তাল সেই দিনটিতে ড. ইনাম কি কলমযুদ্ধে বাঙালিকে তার লেখা নাটক ‘আবার আসিব ফিরে’ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করেনি!

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নাটক ‘বাংলা আমার বাংলা’,

প্রথম একুশে ফেব্রুয়ারির নাটক ‘মালা এক শত মালঞ্চের’ও ড. ইনামের।

অমিত অবদানের স্বীকৃতিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় একুশে পদক।

হৃদির গর্ব হিমালয় যেন।

তবে মাঝে মাঝে অভিমানও হয়।

যখন হৃদি দেখে, ড. ইনামের হেঁটে চলা পথের

অনেক কিছুই সময়ে মেলায় শুধু ...

কী টেলিভিশনে, কী থিয়েটারে-

ক্লান্তিহীন মানুষটির অবিরাম নাটক লিখন...অনবদ্য সব অনুবাদ সৃষ্টির গল্প;

নির্দেশনায় অদেখা রঙে রাঙানো থিয়েটার প্রাঙ্গণ।

এই সবই ভাবায় কি ওদের! আমাদের?

অভিমান বয়ে বেড়াতে পারে না হৃদি।

বাবা যে শিখিয়েছে- অভিমান হলে মনের দরজা খুলে দিতে হয়।

হৃদি তাই অভিমান ভুলতে আবারও দরজা খোলে-

মানুষ ঢল বাড়ির আঙিনায়,

সবার হাতে ভালোবাসা বাক্স ড. ইনামের জন্য... প্রাণভোলানো হাসির জন্য।

হৃদির চোখে কী যেন একটা উড়ে এসে পড়ে,

...

উপচে পড়া সুখজল ঠেকাবে কী করে হৃদি


হৃদি হক, অভিনেত্রী ও নির্দেশক

সূত্র: আজকের পত্রিকা