বন্যপ্রাণীর দৃশ্য দেখানো অপরাধ ‘জানতেন না’ হাওয়া’র পরিচালক

ফানাম নিউজ
  ২৯ আগস্ট ২০২২, ০৮:১১

‘হাওয়া’ সিনেমায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে সিনেমাটির পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

মামলার পর থেকে শিল্পী সংঘ, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজকসহ অভিনেতা-অভিনেত্রীরা মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।

অবশেষে মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন বাদী বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে প্রত্যাহারের আবেদন বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।

ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে মামলা প্রত্যাহারের এ আবেদন করা হয়।

আবেদনে বলা হয়, যেহেতু মামলাটি বন্যপ্রাণী আইন, ২০১২-এর ৩৮(১), ৩৮(২), ৪১ ও ৪৬ ধারায় বাদী দায়ের করেন। আসামি ‘হাওয়া’ সিনেমায় ব্যবহৃত বন্যপ্রাণী সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। বন্যপ্রাণী ব্যবহার করলে যে অপরাধ হবে, সেটাও তিনি জানতেন না। আসামি নিজের ব্যবহৃত প্যাডে বন্যপ্রাণী ব্যবহার সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশসহ নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করেছেন। এরপর বাদী তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ মামলাটি প্রত্যাহার করতে ইচ্ছুক।

বাদীর আইনজীবী জাকির হোসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ মামলার বাদী নার্গিস সুলতানা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। মামলাটির ধার্য তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর। এদিন প্রত্যাহারের বিষয় আদেশ দেবেন আদালত।’

গত ১৭ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর ধারা ৩৮(১), ৩৮(২), ৪১ ও ৪৬ লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। এতে তিনজনকে সাক্ষী করা হয়। তারা হলেন- তদন্ত কমিটিতে কাজ করা আব্দুল্লাহ আস সাদিক, অসীম মল্লিক ও রথিন্দ্র কুমার বিশ্বাস।

গত ২৯ জুলাই ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। মুক্তির পর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত চলচ্চিত্রটির রিভিউতে জানানো হয়, এ চলচ্চিত্রে একটি পাখিকে হত্যা করে চিবিয়ে খেয়েছেন চান মাঝির চরিত্রে অভিনয় করা চঞ্চল চৌধুরী।

রিভিউ প্রকাশের পর হাওয়া চলচ্চিত্রে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় আটকে রাখা ও পরে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ আগস্ট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা ৩৩টি সংগঠনের সমন্বিত প্রয়াস বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)।

এর পরদিন গ্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্রটি দেখে আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ মিলেছে বলে জানান বন অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।